নেইমারের বার্সাস্বপ্ন আটকে দিলেন এমবাপ্পে-কাভানি?

কিলিয়ান এমবাপ্পে ও এডিনসন কাভানির চোট পাওয়ায় নেইমারের ফ্রান্স ছাড়ার চেষ্টা আটকে দিতে পারে পিএসজি

শুরুতে কথা চালাচালি করেছে দুই পক্ষ—বার্সেলোনা ও পিএসজি। পরে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এসবই নেইমারের দলবদল নিয়ে। পিএসজি থেকে নেইমারকে কিনতে চায় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। রোববার নেইমারের দলবদল নাটকে যোগ দিয়েছে ‘চতুর্থ পক্ষ’—আর এ পক্ষ হলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে ও এডিনসন কাভানি। প্রশ্ন উঠেছে, তাঁদের চোট নেইমারকে ফ্রান্স ছাড়তে দেবে তো?

 

ইউরোপে এবার দলবদলের বাজারে নেইমারের সম্ভাব্য দলবদলই সবচেয়ে আলোচিত। এ নিয়ে কত রকম কথাই না হচ্ছে! শুরুতে জানা গেল, পিএসজি নাকি বার্সার কাছে নেইমারকে বেচবে না। বার্সার দুটি প্রস্তাব ফিরিয়েও দেয় তারা। এর মধ্যে দৌড়ে নামল রিয়াল। তবে এ দৌড় থেকে ছিটকেও পড়ার কাছাকাছি তারা। কারণ হালনাগাদ খবর হলো, নেইমারকে বেচতে উল্টো বার্সাকেই একটি প্রস্তাব দিয়েছে পিএসজি— নগদ ১০০ মিলিয়ন ইউরোর সঙ্গে নেলসন সেমেদো ও ওসমানে ডেমবেলেকে দাও, বিনিময়ে নেইমারকে নিয়ে যাও। এ নিয়ে আজ প্যারিসে বৈঠকে বসার কথা বার্সেলোনা-পিএসজির। এমন গরম-গরম ঘটনায় জল ঢেলে দিতে পারে কাভানি ও এমবাপ্পের চোট।

 

বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক। রোববার লিগ ওয়ানে তুলুজের বিপক্ষে পিএসজির ৪-০ গোল ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে চোট পান এমবাপ্পে ও কাভানি। ম্যাচ অফিশিয়ালকে অপমান করায় লিগে পিএসজির প্রথম তিন ম্যাচে খেলতে পারেননি নেইমার। ‘খেলতে পারেননি’ বলাটাও বেশ ভুল হয় কারণ এর আগে পিএসজি কোচ টমাস টুখেল বলেছিলেন, নেইমারের ভবিষ্যৎ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে খেলাবেন না। আর পিএসজির আক্রমণভাগে দুই অন্যতম ফরোয়ার্ডের চোট নিয়ে শেষ খবর হলো, চার সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকবেন এমবাপ্পে। ওদিকে কাভানিকে মোটামুটি তিন সপ্তাহ থাকতে হবে মাঠের বাইরে। ফরাসি ক্লাবটি এর মধ্যে নেইমারকেও ছেড়ে দিলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। আক্রমণভাগ তো পুরো ফাঁকা হয়ে যায়!

 

পিএসজিতে আরও দুজন ফরোয়ার্ড আছেন—হেসে রদ্রিগেজ ও এরিক ম্যাক্সিম চৌপো মোটিং। কিন্তু পিএসজির মতো ক্লাব যে এ সময়ে তাঁদের দিয়ে ‘ঠেকা কাজ চালানো’র ঝুঁকি কোনোভাবেই নেবে না তা বলাই বাহুল্য। হেসেকে তো টানা দুই মৌসুমে ধারে পাঠিয়েছিল পিএসজি। তাতে কোনো উন্নতি হয়নি তাঁর, ফলে পিএসজির মূল একাদশে তাঁকে দেখার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। আবার এমবাপ্পে ও কাভানি চোট কাটিয়ে ফেরার আগেই শুরু হয়ে যাবে চ্যাম্পিয়নস লিগ। আর লিগ ওয়ানে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ তো আছেই।

 

স্পেন ও ফ্রান্সে দলবদলের শেষ সময়সীমা কিন্তু ২ সেপ্টেম্বর। এবার ধরে নেওয়া যাক, পিএসজির শর্ত মেনেই নেইমারকে কিনল বার্সেলোনা। সে ক্ষেত্রে আক্রমণভাগে ডেমবেলেকে পেয়ে গেল পিএসজি। অর্থাৎ ফরাসি এ ফরোয়ার্ডকে দিয়ে এ সময় আক্রমণভাগের শূন্যতা পূরণের সুযোগ পাচ্ছে পিএসজি। কিন্তু সেখানেও সমস্যা আছে। চোট এমনিতেই ডেমবেলের নিত্য সঙ্গী। আর এ মুহূর্তে সেই চোটে পড়েই পাঁচ সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে রয়েছেন ডেমবেলে। ফলে তাঁকে নিলে আগামী তিন সপ্তাহের তিন মূল ফরোয়ার্ড ছাড়াই খেলতে হবে পিএসজিকে। এর মাঝেই লিগে এক ম্যাচ হেরে বসা পিএসজি সে ঝুঁকি নিতে চাইবে?

 

সমস্যা আরও একটি আছে। দলবদলের বাজার বন্ধ হতে আর মাত্র ৬ দিনের অপেক্ষা। পিএসজি যদি সত্যিই নেইমারকে ছাড়তে চায় যা করার এর মধ্যেই করতে হবে। কিন্তু বার্সেলোনা থেকে ডেমবেলে এলেও আক্রমণভাগের শূন্যতা পূরণ হচ্ছে। নেইমারের শূন্যতা পূরণে উইলফ্রায়েড জাহাকে আনবে পিএসজি—এমন গুঞ্জন বাস্তবে কতটুকু সত্য তা নিয়েও সন্দেহ আছে। ফলে নতুন পরিস্থিতিতে পিএসজি তাঁকে ছাড়বে কি না, প্রশ্নটা থেকেই যায়।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *