৩৩ বছর কাটল

 

রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের সিঁড়ি ভেঙে তিনতলায় উঠতেই আওয়াজ পাওয়া যায় হইচইয়ের। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতে গিয়ে দেখা যায়, চলচ্চিত্রের অনেক মানুষ মিলিত হয়েছেন আনন্দ উৎসবে। বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই উৎসব শুরু হয়েছে গতকাল শনিবার সকালে, স্মৃতিচারণা দিয়ে। তারপর মধ্যাহ্নভোজ। এরপর আবারও তাঁরা ফিরে যান স্মৃতিচারণায়।

 

দুপুর গড়িয়ে যখন বিকেল, কেক কাটা হলো। তারপর এক ফাঁকে কখন যে সূর্যটা টুপ করে ডুবে সন্ধ্যা নেমেছে, তা টের পাননি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র কেন্দ্রের ঘরে বসে আর দাঁড়িয়ে চলচ্চিত্র উপভোগ করা দর্শক।

 

৩৩ বছর আগের কথা। ১৯৮৬ সালের ২৪ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম। এই প্রতিষ্ঠানের জন্মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা হলেন মোরশেদুল ইসলাম, তানভীর মোকাম্মেল, তারেক মাসুদ, এনায়েত করিম বাবুল, তারেক শাহরিয়ার, শামীম আক্তার, মানজারে হাসীন মুরাদ, ইয়াসমিন কবির, নূরুল আলম আতিক, জাহিদুর রহিম অঞ্জন, রাশেদ এন চৌধুরী ও আকরাম খান। তাঁদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন গতকালের আয়োজনে।

 

দেশের ৫৬ জেলার ২৫০ উপজেলায় গড়ে ওঠে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের বিকল্প প্রদর্শনের নেটওয়ার্ক। ১৯৮৮ সাল থেকে দুই বছর পরপর ‘আন্তর্জাতিক স্বল্প এবং মুক্ত দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজন করছে এই ফোরাম। ২০১৩ সালে আইন পাসের পর ২০১৪ সাল থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে পথ চলছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট। এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম। গতকাল সেই সংগঠন ৩৩ বছর পূর্ণ করে পা রেখেছে ৩৪-এ। এই সংগঠন এখনো তরুণই বলা যায়। জন্মদিনে উঠে আসে দীর্ঘ যাত্রার সব প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি আর স্বপ্ন। প্রতিবছরের মতো এবারও হয়েছে ৩৩ বছরের যাত্রায় পাওয়া আর না পাওয়ার যোগফল আর বিয়োগফলের হিসাব–নিকাশ।

 

বলা হয়েছে, উন্নত হয়েছে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের পরিবেশ। বিভিন্ন আয়োজন উপলক্ষে অনেক জায়গা থেকে অর্থ পাওয়া সহজ হয়েছে। সহজ হয়েছে সিনেমা নির্মাণ। কিন্তু কোথায় যেন লড়াকু মনোভাব কমে গেছে নাগরিক সংগঠন হিসেবে এই ফোরামের। কমে গেছে আন্দোলন। এভাবেই নিজেদের সমালোচনা করেছেন ফোরামের সদস্যরা। আর সমালোচনার মধ্য দিয়েই তো শুদ্ধ হবেন।

 

উঠে এসেছে দীর্ঘ দাবি আর আন্দোলনের ফল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের বর্তমান অবস্থা, সরকারি অনুদান ও সেন্সর আইনের সমালোচনা। বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনে সরকারের স্থায়ী ফান্ডের প্রয়োজনীয়তাও আলোচিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *