উত্তপ্ত কাশ্মীরে এবার চিত্র ভিন্ন, ঈদের কেনাকাটা বন্ধ

 

কাশ্মীর উপত্যকার ইতিহাসে বহুবার বিক্ষোভ ও সংঘাত হলেও এবার ৩৭০ ধারা রদের মধ্য দিয়ে বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর বিপুল সংখ্যাক সেনা মোতায়েনে ভিন্ন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো সেখানকার প্রতিবেদকদের বরাত দিয়ে জানাচ্ছে, গ্রাম-শহরের পথ ও অলিগলি থেকে শুরু করে পার্বত্য এলাকাতেও সেনা, পুলিশ এবং বিএসএফ টহল দিচ্ছে। সব রাস্তা বন্ধ করে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে, সবখানে কারফিউ জারি করে কাউকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না বাড়ি থেকে। রাস্তায় কাউকে পেলে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, কোথায় যাবে, কেন যাবে।

ল্যান্ড ও মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আগেই, বুধবার সব ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক বন্ধ করা হয়েছে। এভাবে বাইরে থেকে কাশ্মীরে কেউ যোগাযোগ করতে পারছে না, এমনকি কাশ্মীরের ভেতরেও কেউ কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। সংবাদমাধ্যমও কাজ করতে পারছে না।

 

কাশ্মীরে কোন কোন জায়গায় বিক্ষোভ এবং পাথর নিক্ষেপের খবর পাওয়ার কথা বিবিসি বললেও জানিয়েছে, সরকারিভাবে সেসব খবরের নিশ্চয়তা তারা পায়নি। সংবাদ মাধ্যমগুলো তাদের অফিসের আশপাশ থেকে খবর দিচ্ছে যে, মানুষজন বিক্ষুব্ধ।

রাস্তাঘাট ও দোকানপাট বন্ধ। চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞার মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ অঞ্চলের বাসিন্দারা ঈদের কেনাকাটা করতে পারছে না; যেটা এর চেয়ে রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতিতেও আগে কখনো হয়নি। তবে ঈদকে সামনে রেখে কারফিউ শিথিল করা হতে পারে বলে আশা করছেন বাসিন্দারা। সেক্ষেত্রে ঈদের জামাত পড়ার মতো শিথিল হবে কিনা সে ব্যাপারে সন্দিহান তারা।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানাচ্ছে, বাসিন্দারা তাদের নিজেদের পাড়ার বাইরে বের হতে পারছেন না, এমনকি প্রশাসন নিজেদের কর্মচারীদেরকেও কারফিউ পাস দেয়নি। নিরাপত্তা বাহিনী সরকারি আইডি কার্ডও আমলে নিচ্ছে না। ভারতের এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সব স্কুল-কলেজ, সরকারি ভবন এবং আদালত ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে অন্য রাজ্যের আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা। মঙ্গলবারও রাজস্থান থেকে ছয়টি বাস ভর্তি বিএসএস সদস্য নগরীর কেন্দ্রস্থলে এসে নামে।

 

রাজ্যের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের স্থানীয় নেতা (যার বাবাকে জঙ্গিরা মেরে ফেলেছে) বলেন, ‘আমার বাবা ভারতীয় চেতনা ধারণ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে; তাই আমি মূলধারার রাজনীতি করি। কাশ্মীর এখন রাজ্যের মর্যাদা হারানোর পর আমি ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের চিন্তা যদি এগিয়ে নিতে না পারি তাহলে রাজনীতিতে নতুন চিন্তা করব।’

শ্রীনগরের বাসিন্দারা রাজ্য ভাগের বিষয়টিকে অত্যন্ত ক্ষোভ ও হতাশার চোখে দেখছে। তারা এই পরিবর্তনকে মনে করছে যে, মুসলিমদের অংশ কমিয়ে আনাই হচ্ছে এর লক্ষ্য।

আবি গুজার (৩০) নামের একজন কাশ্মীরী তার পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমাদের ভাগ্যে কি আছে তা জানি। তারা প্রথমে আসবে এ রাজ্যে বিনিয়োগের নাম করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *