২০২১ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন রায়গঞ্জের মহাদেব সাহা

নিউজ ডেস্কঃ   এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনিত হয়েছেন সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের কৃতি সন্তান কবি মহাদেব সাহা। তিনি সাহিত্য ক্যাটাগরিতে মনোনিত হয়েছেন। রোববার (৭ মার্চ ২১) মন্ত্রি পরিষদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কমিটি ও অর্থনৈতিক) ড. শাহিদা আকতার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, নয় জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

স্বনামধন্য এই কবি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া গ্রামের পৈতৃক বাড়ীতে ৫ আগস্ট ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম গদাধর সাহা এবং মাতা বিরাজমোহিনী সাহা। কবি মহাদেব সাহা। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলা কবিতার এক উল্লেখযোগ্য প্রেমময় স্পন্দন।

তার প্রথম কবিতার বই ‘এই গৃহ এই সন্ন্যাস’ (১৯৭২) প্রকাশের পর পরই আলোচনায় চলে আসেন তিনি। মূলত ষাটের দশকেই তার কবিতার ভিত্তিমুল শুরু হয়েছিল। সেই থেকে ষাটের দশকের কবি হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত। তাঁর কবিতার ভিত্তিকাল রচনার এই শিল্প-যাপন শুরু হয় রাজধানী ঢাকা থেকে বহু দূর মফস্বল শহর বগুড়ায়। তখন সাহিত্য আন্দোলনের বিভিন্ন জোয়ার চলছিল দেশে । নানা জেনারেশনের বাতাস এবং আবহ ঢাকাসহ কয়েকটি মফস্বল শহরে ছড়িয়ে পড়ে । সুদূর বগুড়ায় বসে তাঁর সতীর্থরা এর উন্মাদনা ও শিল্পে মেতে ওঠেন। ঢাকা শহরের সমান্তরালে এর চর্চা চলতে থাকে। তখনই মহাদেব সাহা ও ফারুক সিদ্দিকীর যৌথ সম্পাদনায় বের হয়ে যায় ছোটকাগজ ‘বিপ্রতীক’।

বগুড়ায় আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক (১৯৬৪) এবং ১৯৬৭ সালে বাংলায় অনার্স পাস করার পর তিনি রাজশাহীতে চলে যান। বগুড়া পর্বের ইতি এখানেই। তারপর ছোটকাগজ ‘বিপ্রতীক’ বের হতে থাকে ফারুক সিদ্দিকীর একক সম্পাদনায়। এর পর কথাসাহিত্যিক জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের হাত ধরে তিনি প্রবেশ করেন সাংবাদিকতায়। বর্তমানে কবি কানাডায় স্বপরিবারে স্বেচ্ছাপ্রবাসী।

তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ এই গৃহ এই সন্ন্যাস ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয়। তারপর একে একে বের হতে থাকে কাব্যগ্রন্থগুলো। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—মানব এসেছি কাছে (১৯৭৩), চাই বিষ অমরতা (১৯৭৫), কী সুন্দর অন্ধ (১৯৭৮), তোমার পায়ের শব্দ (১৯৮২), লাজুক লিরিক (১৯৮৪), মানুষ বড় ক্রন্দন জানে না (১৯৮৯), অস্তমিত কালের গৌরব (১৯৯২), যদুবংশ ধ্বংসের আগে (১৯৯৪), বিষাদ ছুঁয়েছে আজ, মন ভালো নেই (১৯৯৬), কেন মোহে কেনবা বিরহে (২০০০), অন্ধের আঙুলে এতো যাদু (২০০৯), অক্ষরে বোনা স্বপ্ন (২০০৯), হাতে অমৃত কুম্ভ, পান করি বিষ (২০১৬), মাটির সম্ভার (২০১৭)। প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—গরিমাহীন গদ্য (২০০৯), আনন্দেও মৃত্যু নাই (২০১১), ভাবনার ভিন্নতা (২০১১)।

এর আগেও কবিতা যাত্রায় তিনি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার ((১৯৮৩), একুশে পদক (২০০১), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৫), বগুড়া লেখকচক্র পুরস্কার (১৯৯৭), খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কার (২০০২), জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার (২০০৮) ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *