৭ মার্চের ভাষণ এক অভাবনীয় ও অমর বাণী : খাদ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্কঃ  খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ৭ মার্চের ভাষণ এক অভাবনীয় অমর বাণী। ১৮ মিনিটের এই ভাষণ মানুষকে নিস্তব্ধ করেছিল, জাতিকে একত্রিত করেছিল। এই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, হিন্দু-মুসলমান বাঙালি-অবাঙালি সবাই আমরা ভাই ভাই। বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর। বঙ্গবন্ধুর এই দিকনির্দেশনা বক্তব্যেই বাঙালি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্লোগান ছিল, তুমি কে, আমি কে, বাঙালি বাঙালি, তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা। এই স্লোগানের ভিত্তি করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ৬ মার্চ জাতীয় নেতাদেরকে নিয়ে বসলেন এবং একেকজন একেক রকমের ভাষণের ড্রাফট দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নিজের মতো করে ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। যা বাঙালির বুকে আজও নাড়া দেয়। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই বাংলায় ও এই বাংলার আকাশে-বাতাসে এখনো ধ্বনিত হয়। বঙ্গবন্ধুর অমর বাণী, ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

তিনি শনিবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রশাসন আয়োজনে সদর উপজেলা হলরুমে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথ বলেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। যুদ্ধবিধ্বস্ত সে দেশটাকে মাত্র সাড়ে চার বছরের মাথায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরি করে যোগাযোগ স্থাপন, মানুষকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের মধ্যেই এদেশটাকে দুর্ভিক্ষে পরিণতে চেষ্টা করা হয়েছে। যখন বঙ্গবন্ধু প্রতি মহকুমাতে একজন করে জেলা গভর্নর তৈরি করে এই দেশটাকে সমৃদ্ধিশালী সুখী বাংলাদেশ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন ঠিক সেই মুহূর্তে ১৯৭৫ সালের কালরাত্রিতে তাকে হত্যা করা হয়। আমরা সেই অকৃতজ্ঞ জাতি, অভিশপ্ত জাতি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার লাল সূর্য হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার কণ্ঠ আমরা কোথাও শুনতে পাই নাই। এবং তার বিচার যেন না হয় তার জন্য তার রচিত সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে, তার রচিত আদেশ জারি করে বিচারকাজ বন্ধ করে দিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধাপরাধীদেরকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রঞ্জিত লাল সবুজের পতাকা তুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ছিল অভিশপ্ত।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ যাদের কারণে অভিশপ্ত হয়েছিল তখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তি আসে নাই, এদেশে হাহাকার ছিল, ফসল হতো না, আমরা অভাবী ছিলাম, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছিল। তিন বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম সেই তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশে এখন আর কেউ অভাবী নেই। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে প্রয়াস ছিল তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করে যাচ্ছে। বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি এবং বাঙালি জাতির অভিশাপমুক্ত করেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করে। এ সময় মন্ত্রীর নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ওপর অনেক বই বের হয়েছে সেগুলো বেশি বেশি পড়তে হবে। সেটাও যদি না পড়ো তাহলে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা বইগুলো পড়ার চেষ্টা কর জীবনে অনেক কিছু শিখতে পারবে, জীবনকে সুন্দরভাবে গড়তে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *