প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ: জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

 

বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘প্রতিবন্ধীদের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন’ (সিআরপিডি) স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর ১২তম সম্মেলনে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।

 

রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, “বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রায় জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি ও উন্নয়নকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। আমরা দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজে প্রতিবন্ধীদের সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি ‘প্রতিবন্ধীদের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন’ (সিআরপিডি) ও এজেন্ডা ২০৩০ এর আলোকে প্রতিবন্ধী বিষয়ক জাতীয় নীতিমালাগুলোও হালনাগাদ করেছি।”

 

তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন প্রতিবন্ধী বিষয়ক একজন বিশেষ প্রবক্তা। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শুভেচ্ছা দূত ও বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি। সায়মা অটিজম ও প্রতিবন্ধীতার বিষয়ে বিশেষ করে বাংলাদেশ, এতদঅঞ্চল ও এর বাইরে ব্যাপকভাবে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও ফলপ্রসূ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।”

 

বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও এনজিওসহ বেসরকারি খাতগুলো সরকারের এসব প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

 

 

প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার বাস্তবায়িত উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “আসছে জুলাই মাস থেকে সরকার প্রায় ১৪ লাখ বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা দেবে, আর বর্তমানে ভাতাপ্রাপ্তদের এ সংখ্যা ১০ লাখ।”

ক্রীড়া ও উদ্ভাবনীসহ বিভিন্ন খাতে প্রতিবন্ধী যুবদের নানা সাফল্যগাঁথা তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি। এ বছর আবুধাবীতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ অলিম্পিকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ দল ২২টি স্বর্ণ জয়ের যে সাফল্য দেখিয়েছে তাও উল্লেখ করেন তিনি।

 

এছাড়া স্থায়ী প্রতিনিধি বাংলাদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাস্কর ভট্টাচার্যের বিশেষ উদ্ভাবনী-অবদানের কথা উপস্থাপন করেন। ভাস্কর ভট্টাচার্য তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে চারটি ধরণে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রথমবারের মতো অভিধান তৈরি করেছেন এবং ইতোমধ্যে এটি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

 

রাষ্ট্রদূত বলেন, “যদিও ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি তথাপি প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি বাস্তবায়নে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদের আরও অংশীদারিত্ব প্রয়োজন, আর এক্ষেত্রে আমি উন্নয়ন সহযোগিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।”

 

বাংলাদেশ সিআরপিডিতে অনুস্বাক্ষরকারী দেশেগুলোর মধ্যে প্রথম সারির একটি দেশ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন ৬১/১০৬ এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন (সিআরপিডি) গৃহীত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *