লিপ্টন মণ্ডল, মহাদেবপুর, নওগাঁ:
‘পথের পাঁচালী’, ‘অপরাজিত’ বা ‘আরণ্যক’-এর মাধ্যমে কমবেশি আমরা সবাই বিভূতিভূষণের সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু এই করোনাকালে আমার হাতে আসে তাঁর অপেক্ষাকৃত কম আলোচিত উপন্যাস ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’। গল্পের কেন্দ্রে রয়েছেন হাজারী ঠাকুর, যিনি রানাঘাটের এক হিন্দু হোটেলের বামন ঠাকুর। হাজারী বামুন রান্নায় এতটাই সিদ্ধহস্ত ছিলেন যে কলকাতার বাবুরাও তাঁর রান্নার প্রশংসা করতেন। হোটেলটা চলতও মূলত হাজারীর রান্নার গুণেই। কিন্তু হোটেল মালিক বেচু চক্কত্তি আর পদ্মঝি কখনোই হাজারীর সাফল্যের স্বীকৃতি দেননি; বরং কারণে-অকারণে মাইনে কাটা আর পদে পদে পদ্মঝির দেওয়া লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অপমান জুটেছে হাজারীর কপালে। এত কিছুর মধ্যেও সর্বংসহা এই মানুষটি নিজের স্বপ্ন থেকে একচুলও সরে যাননি। শুরু থেকেই হাজারীর চিন্তা ছিল তাঁর নিজের একটা হোটেল থাকবে, যেখানে লেখা থাকবে— ‘হাজারি চক্রবর্তীর হিন্দু হোটেল রানাঘাট/ভদ্রলোকদের সস্তায় আহার ও বিশ্রামের স্থান।/আসুন! দেখুন!! পরীক্ষা করুন!!!’ শেষমেশ কুসুম আর অতসীর দেওয়া মূলধনে স্বপ্নপূরণের সুযোগ পান হাজারী ঠাকুর।