বাড়িতে বসে করোনা চিকিৎসা : যে ৬টি বিষয় মনে রাখা জরুরি

প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। এই মুহূর্তে একটা আতঙ্কের নাম করোনা। কোনো ব্যক্তির ভেতর করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ দেখা দিলে (যেমন-সর্দি, কাশি, জ্বর) আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন তিনি। বিশেষ করে কী করতে হবে? কোথায় যোগাযোগ করা প্রয়োজন? ডাক্তার পাওয়া যাবে কোথায়? হাসপাতালে যেতে হবে কিনা?-এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খায় মাথার মধ্যে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই সারা পৃথিবীতে যত মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের ৮০ শতাংশেরও বেশি বাসায় থেকে নানাভাবে উপশমের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
নিজেকে বিচ্ছিন্ন করুন
যদি সন্দেহ হয় যে আপনার মধ্যে কোভিড-১৯-এর এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেকে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন বা আইসোলেট করুন। এতে অন্যদের মাঝে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে আসবে।
জ্বর হলে যা করণীয়
করোনাভাইরাস সংক্রমণ থামানোর যেহেতু কোনো ওষুধ নেই, সেজন্য সাধারণ সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয় সেগুলো অনুসরণ করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
ঢাকার বক্ষব্যধি হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী সাইফুদ্দিন বেন্নুর বলেন, এ সময় প্যারাসিটামল খাওয়া এবং গার্গল (কুলকুচি) করা যেতে পারে। তবে জ্বর হলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
কফ থাকলে যা করবেন
যদি আপনার কফ জমে থাকে, তাহলে বসার সময় পিঠে ভর দিয়ে হেলান দিয়ে না বাসাই ভালো। মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন। এতে কফ কিছুটা হালকা হয়ে আসতে পারে। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ওয়েবসাইটে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, কফ হালকা করার জন্য এক চামচ মধু খেতে পারেন। এতে উপকার হতে পারে। তবে বারো বছর বয়সের নিচে বাচ্চাদের মধু দেবেন না।
টেস্ট সেন্টারের ফোন নম্বর রাখুন
বাংলাদেশে এখন ৪৫টির মতো ল্যাবরেটরিতে করোনাভাইরাসের টেস্ট করানো হচ্ছে। আপনার নিকটস্থ টেস্ট সেন্টার কোথায় হতে পারে সে সংক্রান্ত খোঁজ রাখুন। এছাড়া এখন কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাসায় গিয়ে নুমনা সংগ্রহ করছে। তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখতে পারেন।
অক্সিজেন ভাড়া নিতে পারেন
শ্বাসকষ্ট হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রেই সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে করতে রোগীর অবস্থা আরও অবনতি হয়। তাই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে না পারলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় অক্সিজেন নিতে পারেন।
ঢাকার বক্ষব্যধি হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী সাইফুদ্দিন বেন্নুর বলেন, অক্সিজেন বাসায় নেয়ার সিস্টেম আছে। আমরা যখন লং টাইম অক্সিজেন থেরাপি দেই, তখন অক্সিজেন বাসায় নিতে বলি রোগীদের। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে হাই-ফ্লো অক্সিজেন দিতে হবে।
টেলিমেডিসিন সম্পর্কে জেনে রাখুন
করোনা সংক্রমণের এই সময়টিতে অনেক চিকিৎসক রোগীদের সরাসরি দেখছেন না। অধিকাংশ চিকিৎসকের চেম্বারও বন্ধ। তবে গত দুই মাসে অনেক চিকিৎসক টেলিফোন এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এছাড়া বেশকিছু সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চিকিৎসকদের মাধ্যমে টেলিফোনে অথবা ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এ ধরনের সুবিধা দিচ্ছে তাদের ফোন নম্বর হাতের কাছে রাখতে পারেন। টেলিফোন নম্বর জানা থাকলে প্রয়োজনের সময় দ্রুত কাজে লাগবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *