ফিলাডেলফিয়ায় মুনা কনভেনশন ৫-৭ জুলাই :: ‘ইসলাম : দ্যা ব্যালেন্সড ওয়ে অব লাইফ’

নিউইয়র্ক : ‘ইসলাম : দ্যা ব্যালেন্সড ওয়ে অব লাইফ’ এই প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা (মুনা) কনভেনশন-২০১৯। গত বছরের মতো এবছরও যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া অঙ্গরাজ্যের বিখ্যাত ‘পেনসিলভেনিয়া কনভেনশন সেন্টারে’ আগামী ৫-৭ জুলাই যথাক্রমে শুক্র, শনি ও রোববার তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এটি হবে ষষ্ঠ কনভেনশন। মুনা কনভেনশনের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে থাকবে সেমিনার, ইয়্যুথ কনভেনশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিদেশী ইসলামিক স্কলারগণ বক্তব্য রাখবেন। নতুন প্রজন্ম সহ মুসলিম কমিউনিটিকে ইসলামের আলোকে দীনের উপর চলার মধ্য দিয়ে সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠাই কনভেনশনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আয়োজকদের প্রত্যাশা এবারের সম্মেলনের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১৫ হাজার মুসলিম নর-নারী যোগ দেবেন। মুনা কনভেনশনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিস্টরা জানিয়েছেন। গত বছরের মতো এবারো কনভেনশনের কনভেনরের দায়িত্ব পালন করছেন সিপিএ আরমান চৌধুরী। খবর ইউএনএ’র।

মুনা ও কনভেনশনের অন্যান্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন: ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ইমাম দেলোয়ার হোসাইন, ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুজ্জামান, মাওলানা এবিএম ফয়জুল্লাহ ও ডা. সাঈদুর রহমান চৌধুরী, কনভেনশনের চেয়ারম্যারম্যান আবু আহমেদ নূরুজ্জামান, ন্যাশনাল এক্সিকিউভিট ডাইরেক্টর হারুন অর রশীদ সহ ডা. আতাউল ওসমানী, মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল আরীফ, মাহবুবুর রহমান, রশীদ আহমদ প্রমুখ।

মুনা কনভেনশনের কর্মকর্তারা জানান এবারের কনভেনশনে ‘ইন্টারফেইথ’ বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রাধান্য থাকবে। মুনা যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি সামাজিক সংগঠন। মুনা’র কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ নয়, ইসলামের আলোকে জীবন-যাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলিমদের বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম নিয়ে মুনা কাজ করছে। মুনা গত বছরও একই কনভেনশন সেন্টারে বিশাল কনভেশন আয়োজন করে। এই কনভেনশন মুসলিম জীবনে বিশেষ করে বাংলাদেশী-আমেরিকান পরিবারের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

সম্মেলনে মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ক আলোচনা, সেমিনার ছাড়াও তরুণ ছেলে-মেয়েদের জন্য থাকবে আলাদা ‘ইয়ুথ কনভেনশন”। ভারসাম্যপূর্ণ জীবনের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের উপর প্যারালাল প্রোগ্রাম। আরো থাকবে ‘মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ বিভিন্ন ইসলামী ও অন্যান্য সামগ্রীর দোকান নিয়ে বিশাল বাজার। ছোট ছেলে-মেয়েদের জন্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ‘লার্ন এন্ড ফান’। বিভিন্ন ‘খেলাধুলা-রাইড’ এর ব্যবস্থা। এছাড়া ফিলাডেলফিয়া ভ্রমণকারীদের জন্য থাকবে আমেরিকার স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতিবহুল ‘ভাতৃপ্রতিম ভালোবাসার শহর’ নানা দর্শনীয় স্থান পরিভ্রমন ও পরিদর্শনের সুযোগ।

মুনা আমেরিকার একটি দাওয়াতি ও সামাজিক সংগঠন। মানুষের ব্যক্তিগত, নৈতিক ও সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি তালাশের নিমিত্তে প্রতিষ্ঠিত হয় মুনা। এই সংগঠনটি ১৯৯০ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে কর্পোরেশন-ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে মুনা আমেরিকার ৩০ এর অধিক রাজ্যে কর্মতৎপরতা পরিচালনা করছে। মুসলিমদেরকে প্রাত্যহিক, সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ড এবং জাতীয় নাগরিক জীবনে ভূমিকা পালনের নিমিত্তে সংগঠিত করতে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে করে এই সমস্ত ব্যক্তিবর্গ আল্লাহ এবং তার রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণের মাধ্যমে ও মানবতার সেবা করে যেতে পারেন সূচারুরূপে।

মুনা সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ষান্মাসিক এবং বার্ষিক পরিকল্পনার ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের ও পর্যায়ের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে; যাতে শিক্ষাদান করা হয় ইসলামের বিভিন্ন দিক ও বিভাগ এবং মানুষের দৈনন্দিন সাধারন সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবন সম্পর্কিত বিষয়াবলী। মানুষের ব্যক্তিগত মানোন্নয়ন ছাড়াও মুনা স্থানীয় ও জাতীয় জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে নানা সামাজিক ও নাগরিক অধিকার সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে থাকে। নিজেদের সাধ্য ও সামর্থানুযায়ী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদেরকে বিভিন্ন ধরনের ধাতব্য ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকান্ডে প্রতিনিয়ত উৎসাহিত ও সংযুক্ত করছে; যাতে করে তারা যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দুস্থ মানবতার পাশে দাঁড়াতে পারে। মুনা নিজের জনশক্তি ও অন্যান্য মুসলিমদেরকে নিয়ে এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দিতে চায় যাতে করে তারা অন্য ধর্মাবলম্বী ও ভিন্ন ভাষাভাষী বর্ণ ও গোত্রের জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবেশীদের সাথে পারস্পারিক সংলাপে নিয়োজিত হতে পারে, যার মাধ্যমে অন্ত: ও আন্ত:সাম্প্রদায়িক বোঝাপড়া, সামাজিক প্রসার ও উন্নয়ন ঘটানো যায়। মুনা মনে করে, এ প্রক্রিয়ায় এই সমাজে সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব। এবারের কনভেনশন এই ক্ষেত্রেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *