জনগণ বিএনপির বিরুদ্ধে অসহযোগ শুরু করেছে: ওবায়দুল কাদের

অনলাইন ডেস্ক:

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণ ইতিমধ্যে বিএনপির বিরুদ্ধে অসহযোগ শুরু করেছে। এর প্রমাণ—আপনারা হাট বাজার, দোকান পাট, মার্কেটে গিয়ে দেখুন। রাস্তাঘাটে গাড়ি চলছে, জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। এর অর্থ বিএনপির ডাকে জনগণ সাড়া দেয়নি। বিএনপি যতই গুপ্ত হামলা, ট্রেনে আগুন, বাস পোড়াচ্ছে জনগণের উপস্থিতি ততই বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার ( ২১ ডিসেম্বর ) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে পালিয়ে গেছে, তাঁরা আবার উঁচু গলায় কথা বলে। এই বিএনপির নেতারা বলতেন শেখ হাসিনা পালিয়ে যাচ্ছেন, মন্ত্রী-এমপিরা পালিয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল ২৮ তারিখে তাঁদের কী যে দৌড়। পলাতক দল এখন অসহযোগ আন্দোলন করবে। যে দল আন্দোলনের কথা বলে পালিয়ে গেল, তারা আবার অসহযোগ করবে!

তারেক রহমানের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একজন তারেক রহমান টেমস নদীর তীরে বসে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। সাহস থাকলে আসেন। রিমোট কন্ট্রোলে কেন? রাজপথে এসে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিন। জেলে যাওয়ার সাহস নিয়ে আসুন, তা না হলে নেতা হতে পারবেন না। রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলন হয় না।

গুপ্ত হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সব গুপ্ত হামলা বন্ধ করুন, তা না হলে দেশের জনগণ ধরে ধরে বিচার করবে, জনগণই প্রতিহত করবে। জনগণ নির্বাচনের দিকে আর আপনারা নির্বাচন বন্ধ করতে চান। সেই খায়েশ আপনাদের পূরণ হবে না।

দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চলছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় বিপুল জনসাধারণের উপস্থিতি প্রমাণ করে ৭ জানুয়ারি জনতার জয় হবে। আমরা নির্বাচনমুখী তৎপরতায় প্রচার প্রচারণা শুরু করেছি উৎসবমুখর পরিবেশে। নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় টুকটাক সমস্যা হচ্ছে, তবে মেজর কোনো সমস্যা নাই।’

জোট শরিকদের আসনে স্বতন্ত্র থাকায় তারা বেকায়দায় পড়েছে সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ কী করবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে তাদের বাধা দেব না। তাদের জোর করে সরিয়ে নেওয়া আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হবে। আমি মনে করি তাদের নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে জনগণের সমর্থন যে যা পাবেন তাই। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হারলে হারবেন, আর জিতলে জিতবেন। কে হারবে কে জিতবে এই দায়িত্ব আমাদের না।’

ডামিদের নিয়ে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বিএনপির এমন বক্তব্যের জবাব জানতে চাইলে কাদের বলেন, আসলে বিএনপি হলো একটা ডামি দল। বাংলাদেশে প্রথম কিংস পার্টি বিএনপি। জন্মগতভাবেই বিএনপি গণতন্ত্র হত্যাকারী নির্বাচন বিরোধী দল।

এর আগে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সরকারকে সব ধরনের ট্যাক্স, খাজনা, ইউটিলিটি বিল এবং অন্যান্য প্রদেয় স্থগিত রাখতে বলেন তিনি। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে বলব—ট্যাক্স যাদের বাকি ট্যাক্স আদায় করুন, যাদের পানি-বিদ্যুৎ বিল বাকি বিল আদায় করুন। ব্যাংক থেকে যারা লোন নিয়ে টাকা পাচার করেছে তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করুন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ট্যাক্স ফাঁকি দিলে আদায় করতে হবে, সাজাও দিতে হবে। আমরা সেই পথে আছি।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *