পূর্ব ইউরোপে সেনা মোতায়েন নিয়ে বিভক্ত ন্যাটো

নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ আক্রমণের আগেই পূর্ব ইউরোপে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন নিয়ে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত তিনি মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পূর্ব ইউরোপের ন্যাটো দেশগুলোতে হাজারো সেনা মোতায়েন করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি মিত্র দেশ আলোচনা করছে। যেসব দেশ সেনা গ্রহণে রাজি হয়েছে সেগুলো হলো রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও হাঙ্গেরি।

অপর এক ইউরোপীয় কূটনীতিক জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রাক-আক্রমণ মোতায়েন হিসেবে সেনা মোতায়েন করতে চাইছে। তবে ন্যাটোর সব ৩০ সদস্য রাষ্ট্র এই বিষয়ে একমত হতে পারেনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এখবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত সেনা গ্রহণে রাজি হওয়া দেশগুলোর প্রতিটিতে প্রায় ১ হাজার করে সেনা মোতায়েন করা হতে পারে। এই সংখ্যা বাল্টিক দেশ ও পোল্যান্ডে মোতায়েনকৃত ব্যাটল গ্রুপের সমান।

ন্যাটো মিত্ররা রাশিয়ার আক্রমণের হুমকির বিষয়ে এক অবস্থানে নেই। যেমন- জার্মানি ইউক্রেনকে নতুন অস্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বা জোটের ইচ্ছায় অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর বিষয়টি আলোচনা করছে বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।

গত সপ্তাহে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, বৃহৎ অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক লক্ষ্য হলো ন্যাটো মিত্রদের সামর্থ্য বাড়ানো। ইউরোপে এখন যেমন মার্কিন সেনারা একতরফাভাবে কাজ করতে পারেন তেমনি হতে পারে অথবা তারা ন্যাটো কাঠামোর অধীনে সক্রিয় হতে পারে।

রাশিয়ার আক্রমণের আগেই দেশটির সীমান্তের কাছে নতুন করে সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা মার্কিন প্রশাসনের অবস্থান বদলের ইঙ্গিত। এর আগে প্রশাসন এটিকে মস্কোকে উসকানি দেওয়া হিসেবে বিবেচনা করেছিল। এটিকে ন্যাটোর আগ্রাসী অবস্থান হিসেবে তুলে অস্ত্র বানাতে পারে মস্কো। যা ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে এতদিন ধরে বলে আসছিল ক্রেমলিন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কিরবি সোমবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সাড়ে আট হাজার সেনাকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। যদি ন্যাটোর রেসপন্স ফোর্স চায় এবং মার্কিন সেনাদের সেখানে দ্রুত উপস্থিতি প্রয়োজন হয় তাতে সাড়া দিতে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার কিরবি সিএনএনকে জানান, কিছু সেনাদের যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব স্বার্থের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যদি ইউরোপজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ন্যাটো মিত্রদের দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে আশ্বস্ত করা লাগ।
সিএনএনকে দুটি সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে এই সপ্তাহে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বাইডেনের। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক উদ্যোগে জড়াবে কিনা তা নিয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিয়েছে।

ইউক্রেনে যে কোনও সময়ে রাশিয়া আক্রমণ করতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বৃদ্ধির কারণে এই সামরিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জেন সাকি মঙ্গলবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেছেন, যখন আমরা আসন্ন বলি, তখন তা আসন্ন থাকে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিন কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা আমরা পূর্বানুমান করতে পারি না। আমরা এখনও কূটনৈতিক উপায়ে আলোচনায় লিপ্ত আছি।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার জেন সাকির মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তারা বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে পরিস্থিতি বিপজ্জনক কিন্তু আসন্ন নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *