করোনাভাইরাস ২০ মিনিটের মধ্যে ৯০ ভাগ সংক্রমণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে: গবেষণা তথ্য

নিউজ ডেস্কঃ বায়ুবাহিত হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে আমাদেরকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা শতকরা ৯০ ভাগ হারিয়ে ফেলে করোনাভাইরাস। এর মধ্যে প্রথম ৫ মিনিটেই সবচেয়ে বেশি সক্ষমতা হারায় সে। এই ভাইরাস বাতাসে কিভাবে ছড়ায় এবং তা টিকে থাকে, তা নিয়ে নতুন এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। গবেষণালব্ধ তথ্যের ওপর আবারও জোর দিয়ে বলা যায়, কিভাবে স্বল্প পরিসরে কোভিডের বিস্তার ঘটে এক্ষেত্রে করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মুখে মাস্ক পরা। এক্ষেত্রে স্বল্প প্রভাব ফেলতে পারে ভেন্টিলেশন বা বায়ু চলাচল। ইউনিভার্সিটি অব বৃস্টলের এরোসল রিসার্স সেন্টারের গবেষণায় এসব কথা বলা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান।

ওই ইউনিভার্সিটির এরোসল রিসার্স সেন্টারের পরিচালক ও এ গবেষণার শীর্ষ লেখক প্রফেসর জোনাথন রিড বলেন, লোকজনের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে দুর্বল ভেন্টিলেশন হয় এমন স্থানগুলোতে। তারা মনে করছে এই ভাইরাস বায়ুবাহিত হয়ে সংক্রমিত হতে পারে এক মিটারের কিছু বেশি দূরত্বে বা একটি রুমের মধ্যে।

আমি এমনটা বলছি না যে, তা ঘটছে না। আমি মনে করি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো আপনি অন্য একজনের কতটা কাছে বা ঘনিষ্ঠ। যখন আপনি দূরত্ব বজায় রাখেন, তখন বাতাসের কণাগুলোই শুধু হালকা হয় এমন না। একই সঙ্গে ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতাও হারিয়ে যায়। সে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

বাতাসে কিভাবে করোনাভাইরাস টিকে থাকে, কতটা সময় টিকে থাকে, তা নিয়ে গবেষণা করেছে মার্কিন একটি টিম। এতে ব্যবহার করা হয়েছে গোল্ডবার্গ ড্রাম নামে একটি সিল করে দেয়া ভেসেল। ঘূর্ণনের মাধ্যমে ভিতরে ছেড়ে দেয়া বাতাসের কণাগুলো এর চারদিক ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, তিন ঘন্টা পরেও করোনাভাইরাসকে সংক্রামক হিসেবে শনাক্ত করা যায়। কিন্তু যখন আমরা কাশি দিই বা শ্বাস-প্রশ্বাস নিই তখন প্রকৃতপক্ষে কি ঘটে তা এই পরীক্ষা প্রকাশ করে না।

পক্ষান্তরে ইউনিভার্সিটি অব বৃস্টলের গবেষকরা এমন অ্যাপারেটাস বা যন্ত্রানুষঙ্গ তৈরি করেছেন, যাতে ভাইরাসযুক্ত যেকোনো পরিমাণ কণাকে ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়। এর ভিতরে থাকে দুটি বৈদ্যুতিক রিং। ৫ সেকেন্ড থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে এই পরীক্ষা করা হয়। এ সময় তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং আশপাশের অতিবেগুনি রশ্মিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। শ্বাস ছাড়ার সময় যেসব কণা ছড়িয়ে পড়ে তাদের কি ঘটে এই পরীক্ষায় তা প্রথমবার যথাযথভাবে দেখানো হয়েছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানী রিড।

তাদের এ গবেষণা এখনও পিয়াররা পর্যালোচনা করেননি। এই পরীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাইরাসযুক্ত পার্টিকেলগুলো ফুসফুসের তুলনামূলক আর্দ্র ও কার্বন ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ অবস্থা থেকে বেরিয়ে যায়। তারা পানি ত্যাগ করে এবং শুষ্ক হয়। অন্যদিকে দ্রুত পিএইচ বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত কম মাত্রার কার্বন ডাই অক্সাইড। এসব বিষয় ভাইরাসকে মানুষের কোষে সংক্রমণ সক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *