সিলেটের উন্নয়নে পাশে থাকার অঙ্গীকার পরিকল্পনামন্ত্রীর

নিউজ ডেস্কঃ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সিলেটের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এই শহরের মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য, তাদের আনন্দের জন্য, নির্বিঘ্নে চলাফেরা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য যা করতে হয় তা-ই করা হবে। সব সময় আপনারা আমাকে পাশে পাবেন।

তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করার চমৎকার সময় এখন। আমরা কাজ করে আনন্দ পাই। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই। আমাদের টিম লিডার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের লক্ষ্য ঠিক করে দেন আমরা তা বাস্তবায়ন করি।’

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট প্রেসক্লাব-মুহিবুন্নেসা সম্মাননা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিলেট প্রেসক্লাবের মরহুম আমিনূর রশিদ চৌধুরী মিলনায়তনে ক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ বছর এই সম্মাননা পদক পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, নিষ্ঠাবান গবেষক ও দৈনিক সিলেটের ডাকের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিক।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গণমানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন কর্মপ্রাণ নেত্রীর সঙ্গে কাজে করে আমি পুলকিত। এটি আমাদের রাজনৈতিক অভিলাষ। অভিলাষ মানেÑএই অভিলাষ আমাদেরকে তাড়িত করেছে স্বাধীনতার জন্য। আওয়ামী লীগ সেই অভিলাষকেই ধারণ করে। সেটি হচ্ছে গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, দারিদ্্র দূর করে দেশের আধুনিকায়নÑযেখানে মানুষ শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করবে, বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে ওঠবে। তিনি বলেন, আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। তা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত ভাটির মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে। আর সেই সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নিজেও ভাটির মানুষের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নমুলক কাজের লক্ষ্য ঠিক করে দেন করেন। আমরা তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করি।

বৃহত্তর সিলেটের উন্নয়নের ব্যাপারে শেখ হাসিনারও আগ্রহ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনসহ বৃহত্তর সিলেটের রাস্তাঘাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নে বহু প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সিলেট-বাদাঘাট-বিমানবন্দর সড়ক, রাণীগঞ্জ সেতু শিগগিরই শেষ হবে। বর্তমান সময়ের চেয়ে আরও ৩ ঘন্টা কম সময়ে সুনামগঞ্জের মানুষ যাতে রাজধানীতে যাতায়াত করতে পারে সে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় উড়াল সেতু, রেল লাইন ও সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজে তদারকি করছেন। জনকল্যাণমুলক যেকোন উন্নয়ন প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর কাছে অগ্রাধিকার পায়।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সময় এখন চমৎকার। কাজের জন্য টাকা কোনো সমস্যা নয়। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে আরও বেশি করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রেরণের তাগাদা দিয়ে বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে তাঁর সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

সম্মাননা পাওয়া সাংবাদিক আবদুল হামিদ মানিকের বহুমুখী প্রতিভার প্রশংসা করে বলেন তিনি একজন চমৎকার ব্যক্তি। তাঁর সাংবাদিকতা, লেখনী ও গবেষণা জাতিকে অনেক দিয়েছে। সাহিত্য সাংবাদিকতায় তিনি যে অবদান রেখে যাচ্ছেন তা বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয়। তিনি আব্দুল হামিদ মানিকের সুদীর্ঘ-সুস্থ জীবন কামনা করেন। সিলেট প্রেসক্লাব-মুহিবুন্নেছা সম্মাননা পদক প্রবর্তন করায় সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকনের পরিবারের প্রতিও মন্ত্রী ধন্যবাদ জানান। তিনি এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আব্দুল হামিদ মানিক একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও গবেষক। তিনি সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। প্রেসক্লাব তাঁকে সম্মানিত করায় আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি।

সিটি মেয়র বলেন, সিলেট নগর উন্নয়নে আমি যখনই পরিকল্পনামন্ত্রীর স্মরণাপন্ন হয়েছি তখনই তিনি উদার হস্তে এগিয়ে এসেছেন। সিলেটের উন্নয়নে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার কথা উল্লেখ করে মেয়র এ ব্যাপারে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আহমেদ নূর ও ইকরামুল কবির, সিলেট প্রেসক্লাবের আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ক্লাবের নির্বাহী সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *