গত বছরের চেয়ে এবার সিলেট বোর্ডে ৭ হাজার ৫৩১ জন পরীক্ষার্থী কম

নিউজ ডেস্কঃ গেল বছর অটোপাশের পর এবার আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সরাসরি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। সিলেট বিভাগের ৪ জেলার ৮৫টি কেন্দ্রে কোভিড-১৯ যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

গত বছরের চেয়ে এবার সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ৭ হাজার ৫৩১ জন পরীক্ষার্থী কমেছে। এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৭ হাজার ৭৯২ জন। সারা দেশের ন্যায় সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বৃহস্পতিবার পদার্থ বিজ্ঞান (তত্বীয়) ১ম বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুন চন্দ্র পাল সিলেটের ডাককে জানান, করোনা মহামারীর এই সময়ে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কঠোর স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য অভিভাবক, শিক্ষকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রমা বিজয় সরকার জানিয়েছেন, করোনার মাঝেও পরীক্ষা দেবেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। এজন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের নিজস্ব ভিজিল্যান্স টিম থাকবে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন টিম পরীক্ষায় কাজ করবে। সুন্দর পরিবেশে যথাযথভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরীক্ষা গ্রহণ করাই আমাদের লক্ষ্য।

জানা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের এবারের মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৭ হাজার ৭৯২ জন। এর মধ্যে ৩০ হাজার ৮২২ জন ছাত্র ও ৩৬ হাজার ৯৭০ জন হলেন ছাত্রী। গতবছর অটোপাশে এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ৭৫ হাজার ৩২৩ জন পরীক্ষার্থী ফরমফিলাপ করেন। এর মধ্যে ছাত্র ছিলেন ৩৪ হাজার ১৪৯ জন ও ৪১ হাজার ১৭৪ ছিলেন ছাত্রী। গেল বছরের তুলনায় এবার ৩ হাজার ৩২৭ জন ছাত্র ও ৪ হাজার ২০৪ জন ছাত্রী কম ফরমফিলাপ করেছেন। অন্যান্য বছর শিক্ষার্থীদেরকে নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশের পর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেয়া হতো। কিন্তু করোনা মহামারী শুরুর পর এ ধারায় পরিবর্তন আসে।

সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৯ হাজার ১৭৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৩ হাজার ৭৯৬ জন ও ছাত্রী হলেন ১৫ হাজার ৩৭৭ জন। এ জেলার ১৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা ৩২ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।

হবিগঞ্জ জেলার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৪৩৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ৬১৫ জন ও ৬ হাজার ৮১৯ জন হলেন ছাত্রী। হবিগঞ্জ জেলার ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীরা ১৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন।

মৌলভীবাজার জেলার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার ২৭৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ৬৩৭ জন ও ছাত্রী হলেন ৭ হাজার ৬৪২ জন। এ জেলার ৪৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা ১৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।

সুনামগঞ্জ জেলার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৯০৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ৭৭৪ জন ও ৭ হাজার ১৩২ জন হলেন ছাত্রী। সুনামগঞ্জ জেলার ৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষার্থীরা ২১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন।
এবার মোট ২৯৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। এবারের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের মোট পরীক্ষার্থী ১৩ হাজার ৮৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ৩১২ জন ও ছাত্রী ৬ হাজার ৭৭৬ জন। মানবিক বিভাগের মোট পরীক্ষার্থী ৪৫ হাজার ৩০১ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ১৯ হাজার ৪০৪ জন ও ছাত্রী হলেন ২৫ হাজার ৮৯৭। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের মোট পরীক্ষার্থী ৯ হাজার ৪০৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ১০৬ জন ও ছাত্রী ৪ হাজার ২৯৭ জন।

সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে ২৪টি ভিজিল্যান্স টিম। বোর্ডের চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে বোর্ডের ৫টি ভিজিল্যান্স টিম। ১৯ জন শিক্ষকের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে আরও ১৯টি ভিজিল্যান্স টিম। টিমের সদস্যরা পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণও পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন বলে জানা গেছে।

গত বছর সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ৭৫ হাজার ৩২৩ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্যে ফরমফিলাপ করেছিলেন। তাদের সবাইকে অটোপাশ দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ২৪২ জন জিপিএ -৫ অর্জন করেন। অটোপাশে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিলেন ২ হাজার ১৩৩ জন ও ২ হাজার ১০৯ জন ছিলেন ছাত্রী।

গেল বছরের ২২ মার্চ দেশে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিন নির্ধারণ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু এর আগে ১৭ মার্চ থেকেই দেশে প্রথম দফায় কঠোর লকডাউন শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে লকডাউন দীর্ঘ হতে থাকে। এক পর্যায়ে পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর অটোপাশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *