জিয়াউর রহমান ঘোষণা না দিলে তো মুক্তিযুদ্ধই শুরু হতো না : মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমানের সম্পর্কে সরকার অশ্লীল অস্রাব্য ভাষায় কথা বলে ,তাঁর মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কথা বলে, আরে জিয়াউর রহমান ঘোষণা না দিলে তো মুক্তিযুদ্ধই শুরু হতো না। জিয়াউর রহমান রণাঙ্গণে যুদ্ধ না করলে এই দেশ স্বাধীন হতো না এটা বাস্তবতা। এ সমস্ত কটুক্তি করা বাদ দেন, মিথ্যাচারীতা বাদ দেন, মানুষের সমস্যা সমাধান করার দিকে নজর দিন। এখনো সময় আছে পদত্যাগ করেন, ব্যার্থতার জন্য এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেশ টাকে রক্ষা করেন দেশের মানুষকে রক্ষা করেন তা না হলে এই মানুষ আপনাদের ঘার ধরে ক্ষমতা থেকে নামাবে। জামায়াত ইসলাম একটা রাজনৈতিক দল তাদের রাজনীতি করার অধিকার আছে । আমাদের দেশ আমাদের সংবিধান সেটা তাদের দিয়েছে। সরকারি দলের চুনোপুটিরাও রুই কাতলা হয়ে গেছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারা গরীব থেকে আরও গরীব হয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের দূর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা এখন পর্যন্ত সরকার কি ভাবে পরিবর্তন করবো সেটাই ঠিক করতে পারলাম না।

তিনি মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় হল রুমে নেতা কর্মীদের সাথে মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি আরও বলেন,‘আওয়ামী লীগের দাবিতেই আমরা তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিলাম । ৪ টা নির্বাচনও সুন্দর ভাবে হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে যখন বুঝতে পাড়লো জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে । যখন বুঝতে পাড়লো সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না তখন তারা তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিল। আজকে গোটা বাংলাদেশ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে , অস্থিতিশীলতার মধ্যে আছে। বিএনপি সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল কিন্তু তারা রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে পুলিশ, বিডিআর ব্যবহার করে ভয়ংকর ভাবে হত্যা করে তারা সেই আন্দোলন কে নস্যাৎ করে দিয়েছে। সারা দেশে ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা । সরকার রাজনীতি করার কোন সুযোগ রাখছে না।

মিটিং, মিছিল ,প্রতিবাদ করার সুযোগ পর্যন্ত নাই। কেউ কথা বলতে পারবে না কথা বললেই তার বিরুদ্ধে মামলা । দেশের মানুষের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এটা বিএনপির সংকট না , পুরো জাতির সংকট । সম্পূর্ণ জাতির ক্রান্তিকাল । এই সংকট থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে। গোটা দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সরকার করোনা নিয়ে ব্যবসা করেছে ।

তিনি বলেন, ‘২০ টাকার মাস্ক কিনেছে ৭শত থেকে ৮ শত টাকায়। টিকা না পাওয়ার জন্য আওয়ামীলীগের দুর্নীতি দায়ী । প্রতিটি ক্ষেত্রেই আওয়ামীলীগ দুর্নীতি করছে । আমরা কখনো শুনিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর দুর্নীতি করেছে। তারা নিয়োগ বাণিজ্য করে। কিন্তু এখন করছে কারণ সেখানে এখন আওয়ামীলীগের লোকদের নিয়ে গিয়ে বসাচ্ছে। যাবো কোথায় ? যে পুলিশের কাছে আমরা যাই চোর ডাকাত ধরার জন্য ওরাই এখন চোর ডাকাত হয়ে বসে আছে। আজকে গণতন্ত্রের যে সংকট এ সংকট শুধু বিএনপির না এ সংকট সকলের ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে যে আওয়ামী লীগ লুট পাট করছে এটা প্রতিরোধ না করতে পাড়লে দেশ তাবেদার রাষ্ট্রে পরিনত হবে। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা সরকার নয়। আওয়ামীলীগ সরকার আজকে তাবেদার সরকারে পরিণত হয়েছে। একটা পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে। সংগঠন ও জনগণের কোন বিকল্প নেই। জনগণ জেগে উঠলে সবাই পালাতে বাধ্য হবে। সেই জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে। সেটাই হচ্ছে বিএনপির দায়িত্ব। ইনশাল্লাহ শক্তি নিয়ে এই দানব সরকার কে সরাতে সক্ষম হবো । দেশ টা পুরো পুরি জেল হয়ে গেছে। আমরা সবাই জেলের মধ্যেই আছি। আসুন আমরা সবাই মিলে এই জেলটাকে একবার ভাংগার চেষ্টা করি। একটু মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করি।

এ সময় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈয়মুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনসহ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *