লিভারপুলে ‘ত্রিফলা’র যোগ্য বিকল্প কোথায়?

নাপোলির বিপক্ষে প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরেছে লিভারপুল। এ নিয়ে বড় দলগুলোর বিপক্ষে চারটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা হয়ে গেল লিভারপুলের, এখনো জয়ের মুখ দেখল না তারা। এক সপ্তাহ পর ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে কমিউনিটি শিল্ড খেলতে যাওয়া লিভারপুলের প্রস্তুতি মন মতো হলো না

 

চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী লিভারপুলের সামনে আরেকটি ট্রফি জেতার সুবর্ণ সুযোগ। ৪ আগস্ট কমিউনিটি শিল্ড শিরোপা জেতার লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে খেলতে নামবে তারা। কিন্তু সে ম্যাচের প্রস্তুতিটা ঠিকঠাক হলো না। নাপোলির সঙ্গে পরশু প্রীতি ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরেছে দলটি। বড় দলগুলোর বিপক্ষে এ নিয়ে চারটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেও জয়ের মুখ দেখেনি লিভারপুল।

 

প্রথমার্ধে বেশ শক্তিশালী দল নিয়েই নেমেছিল লিভারপুল। গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার, মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানে ও রবার্তো ফিরমিনো ছাড়া মোটামুটি সবাই-ই ছিলেন এই অর্ধে। তা সত্ত্বেও ২৮ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে তারা। গোল করেন ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড লরেঞ্জো ইনসিনিয়া ও পোলিশ স্ট্রাইকার আরকাদিউশ মিলিক। দ্বিতীয়ার্ধে গোল করেন জার্মান তারকা আমিন ইউনেস। সালাহ-মানে-ফিরমিনোদের ‘ত্রিফলা’ আক্রমণভাগ ছাড়া একদম নখদন্তহীন ছিল লিভারপুলের আক্রমণভাগ। গোল খেলেও দ্বিতীয়ার্ধে তরুণ কিছু খেলোয়াড়কে বাজিয়ে দেখার সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাননি কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে দেখা গেছে সেপ ফন ডার বার্গ, হার্ভে এলিয়ট, রিয়ান ব্রুস্টার, ববি ডানকান, কি-জানা হোয়েভারের মতো আনকোরা তরুণকে।

 

খেলোয়াড়েরা এখনো নতুন মৌসুমের জন্য প্রস্তুত নন, বলেছেন ক্লপ, ‘খেলার শুরুতে আর শেষে আমরা বেশ ভালোই খেলেছি। কিন্তু মাঝে সহজ কিছু গোল হজম করতে হয়েছে। আমাদের আরও ভালো করতে হবে। আমি অজুহাত দিতে চাই না। প্রাক-মৌসুমের প্রস্তুতি আমাদের সঙ্গেই শুরু করেছে নাপোলি। কিন্তু ওরা আমাদের তিন সপ্তাহ পর থেকে লিগ খেলা শুরু করবে। তাই বাকি সময়ে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমি আগে থেকেই জানতাম সামনের মৌসুমটা আমাদের জন্য অনেক কঠিন হবে। আগামী সোমবার থেকে সাদিও মানে ছাড়া আমাদের দলে সবাই চলে আসবে। তখন জোরেশোরে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।’

 

এদিকে কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ আগে থেকেই জানিয়েছেন এই দলবদলের বাজারে বেশি খরচ করতে পারবেন না তিনি, গতবারের মতো। গতবার দলে অ্যালিসন বেকার, ফাবিনহো, নাবি কেইটা ও জের্দান শাকিরি এসেছিলেন। এবার দুজন ষোলো বছর বয়সী তরুণ সেপ ফন ডার বার্গ আর হার্ভে এলিয়ট ছাড়া কাউকেই কেনেনি লিভারপুল। লিগে লিভারপুলের প্রত্যেকটা প্রতিপক্ষ নিজেদের শক্তিবৃদ্ধি করেছে। ৭০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রি কে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে কিনে এনেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ৪৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে রাইটব্যাক অ্যারন ওয়ান বিসাকাকে কিনেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। লিল থেকে ৮০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে উইঙ্গার নিকোলাস পেপে কে নিয়ে আসছে আর্সেনাল।

 

ওদিকে গতবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালিস্ট টটেনহাম দলে এনেছে ফরাসি মিডফিল্ডার ট্যাঙ্গয় এনদোম্বেলেকে। রিয়াল বেতিস থেকে আসতে পারেন জিওভানি ল চেলসোও। শুধু লিভারপুলই হাত গুটিয়ে বসে আছে। নাপোলির আগেও সেভিয়া ও ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে হেরেছে তারা, ড্র করেছে স্পোর্টিং লিসবনের সঙ্গে। মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানে, অ্যালিসন বেকার ও রবার্তো ফিরমিনোর অভাব বোঝা গেছে খুব ভালোভাবে। এরা না থাকলে লিভারপুলের আক্রমণভাগে যে যোগ্য বিকল্প নেই, সেটা প্রমাণিত হয়েছে।

 

এখন প্রশ্ন হলো, এবার আদৌ কি নতুন খেলোয়াড় কিনবেন তিনি? নাকি গতবারের দল নিয়েই ট্রফি যুদ্ধে নামবেন?

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *