ফিলিপাইনে ডেঙ্গুতে ৪৫৬ জনের মৃত্যু, জাতীয় সতর্কতা জারি

ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানুয়ারী থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যাওয়ার পর ‘জাতীয় ডেঙ্গু সতর্কতা’ জারি করেছে। ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে ফিলিপাইন জুড়ে প্রায় এক লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৫% বেশি। সিএনএন।

 

দেশের চারটি অঞ্চলে মহামারী ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো হলো, মিমারোপ, পশ্চিম ভিসায়াস, কেন্দ্রীয় ভিসায়াস এবং উত্তর মিন্দানাও। এ অঞ্চলগুলোতে ২০ মিলিয়নেরও বেশি লোক বসবাস করছে, যা ফিলিপাইনের জনসংখ্যার প্রায় ২০%।

 

সিএনএন ফিলিপাইনের রিপোর্টে বলা হয়, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অন্যান্য অঞ্চলেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। যার মধ্যে রয়েছে ফিলিপিনো রাষ্ট্রপতি রদ্রিগো দুতার্তের নিজ প্রদেশ দাভায়োও। তবে কর্মকর্তারা বলছে, ডেঙ্গু এখনও জাতীয় মহামারী হয়নি। সমস্যাটি এখনও “স্থানীয়” মহামারী পর্যায়ে আছে।

 

ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাল সংক্রমণ। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে, তীব্র মাথা ব্যাথা, পেশী এবং জয়েন্টে ব্যাথা, জ্বর এবং পুরো শরীরে র‌্যাশ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ডেঙ্গু সংক্রামিত প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে আনুমানিক পাঁচ লাখ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় এবং এদের সাড়ে ১২ হাজার জন মারা যায়।

 

ফিলিপাইন, ভারত ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলোতে ডেঙ্গু প্রায়ই দেখা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ায় ডেঙ্গুর জীবানু-বাহী মশা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া চিকুনগুনিয়া, হলুদ জ্বর এবং জিকা ভাইরাসও বেড়ে যেতে পারে। এসবে আক্রান্ত হতে পারে, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও জাপানের মতো দেশ।

 

স্বাস্থ্য সচিব ফ্রান্সিসো ডুকে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘ফিলিপাইনের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু প্রতি তিন থেকে চার বছর পর পর বেড়ে যায়। এর আগে ২০১৬ সালে দেশব্যাপী এই রোগের তীব্র প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার রোগটি ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আগে থেকে ধারণা করেছিলাম।’’

 

দেশব্যাপী হামের প্রাদুর্ভাবের পাশাপাশি ফিলিপাইনে হঠাৎ করে ডেঙ্গু দেখা দিলো। কর্তৃপক্ষ বলছে, হামে এই বছর ২০১৮ সালের তুলনায় বেশি মানুষ মারা গেছে এবং ২৬ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

 

 

ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো মশার প্রজনন স্থানগুলি ধ্বংস করা, মশা নিরোধকের ব্যবহার এবং রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয়ার পরপরই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *