প্রিয়াঙ্কাই শেষ করলেন আইনি যুদ্ধ

 

ভালো আছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ব্যক্তিগত জীবন, ক্যারিয়ার, সমাজসেবামূলক কাজ—সবকিছুই চমৎকারভাবে সামলে প্রজাপতির মতো রঙিন পাখা মেলে উড়ছেন সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক আকাশে। তাই পুরোনো দিনের শত্রুতার সমাপ্তিও ঘোষণা করলেন। পুরোনো ম্যানেজার প্রকাশ যাজুর বিরুদ্ধে ১৫ বছরের মামলা যুদ্ধের অবসান ঘটল। গতকাল শনিবার মামলা তুলে নিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।

 

সে অনেক আগের কথা। প্রথমে মামলা করেছিলেন প্রকাশই, সেটা ২০০৪ সালের ঘটনা। প্রিয়াঙ্কা নাকি চুক্তি ভঙ্গ করে তাঁর চাকরি খেয়েছেন। প্রিয়াঙ্কার বাবাও ২০০৮ সালে প্রকাশের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ ও ব্ল্যাকমেলের অভিযোগ এনে। প্রকাশ যাজুকে এ জন্য ৬৭ দিন জেলের ভাতও খেতে হয়েছে। পরে অবশ্য প্রকাশ যাজুর মায়ের অনুরোধে প্রিয়াঙ্কাই জেল থেকে ছাড়িয়েছিলেন প্রকাশকে।কে জানে কী হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। তবে ২০১৬ সালে প্রিয়াঙ্কা জীবনের সব খারাপ রাত পার করে বলিউডে নিজের অবস্থান শক্ত করলেন। আর তারপর দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন আন্তর্জাতিক তারকা হিসেবে। সেই বছরই বোমা ফাটালেন প্রকাশ যাজু।

 

এক যুগ আগে প্রিয়াঙ্কার ম্যানেজারের চাকরি হারানোর পর প্রিয়াঙ্কার সম্পর্কে ফাঁস করলেন এমন সব কথা, সেগুলো কেউ ভাবতেই পারেনি। পর পর বেশ কয়েকটি টুইট করে তিনি দাবি করলেন যে, প্রিয়াঙ্কাকে এখন হয়তো খুবই শক্ত দেখায়, তবে একটা সময় সেও ছিল খুবই ভঙ্গুর। ক্যারিয়ারের খারাপ সময়ে হতাশায় বিপর্যস্ত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া নাকি দু-তিনবার আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করেছিল। তখন নাকি প্রকাশ যাজুই তাঁকে থামিয়েছিলেন।

 

প্রকাশ যাজু আরও বলেছেন, সে সময়টায় প্রিয়াঙ্কা এবং তাঁর কথিত সাবেক বয়ফ্রেন্ড অসীম মার্চেন্টের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকত। প্রিয়াঙ্কা নাকি সে সময় খুব বিষণ্নতায় ভুগতেন, কান্নাকাটি করতেন আর মাঝরাতে প্রকাশকে ফোন করতেন। একবার অসীমের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার পর প্রিয়াঙ্কা নাকি মাঝরাতে মুম্বাইয়ের ভাসাই এলাকায় গাড়ি ছুটিয়েছিলেন আত্মহত্যা করবেন বলে। সে সময় প্রকাশই নাকি আটকান প্রিয়াঙ্কাকে। প্রকাশ যাজু এও বলেছেন, প্রিয়াঙ্কাকে নাকি মাঝেমধ্যে দড়ি দিয়ে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধেও রাখতে হতো।তবে এসবের কতটা সত্যি, আর কতটা প্রকাশ যাজুর লাইম লাইটে আসার জন্য মিথ্যে দাবি, তা পরীক্ষা করা যায়নি। কারণ তখনো প্রিয়াঙ্কা এত বড় তারকা হয়ে ওঠেননি। আর এখন সময় অনেক গড়িয়ে গেছে, বদলেছে শহর, বদলেছেন প্রিয়াঙ্কা। তবে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মা মধু চোপড়া এসব দাবিকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি।

 

দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আইনি লড়াই লড়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া আর প্রকাশ যাজু। কিন্তু হঠাৎ করেই হয়তোবা তাঁদের মনে হয়েছেন, অনেকে হয়েছে। এবার ক্ষান্ত দেওয়ার পালা। ডেকান ক্রনিকলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে , ‘তাঁদের সম্পর্কের তিক্ততা সময়ের সঙ্গে ধুয়ে গেছে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া সেসব পেছনে ফেলে অনেকটা এগিয়েছেন। সেসব ভুলেও গেছেন তিনি। শুধু মামলাটা তুলে নেওয়াই বাকি ছিল। তিনি নিজেই শান্তি পতাকা তুলেছেন আর মামলা তুলে নিয়ে এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন।’

 

যখন ২০০৪ সালে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া চুক্তি বাতিল করে হঠাৎ করেই প্রকাশ যাজুকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন, তখন অনেকে ভেবেছিলেন এভাবেই বুঝি তিক্ততায় শেষ হলো তাঁদের সম্পর্ক। কিন্তু ঘৃণা ভুলে, সমস্ত ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া নিজেই শান্তির পতাকা ওড়ালেন। কথায় বলে, ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’। তাই বুঝি প্রিয়াঙ্কা শেষটা ভালো করতে উঠেপড়ে লেগেছেন!

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *