কানাডায় এখন আর খুব একটা করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু জন মনে আতঙ্ক বেড়েই চলছে। শনিবার টরন্টোর রাস্তাঘাট, মল, অফিস-আদালত, কল-কারখানা প্রায় শুন্য। ট্রেনে-বাসে-বিমানে যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
করোনা ভাইরাস এড়ানোর জন্য সরকার থেকে নানা ধরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদ অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ডে কেয়ার, লাইব্রেরি, মিউজিয়ান, গ্যালারি, ক্যাসিনিউ, নায়গ্রা ফল, সিএন টাওয়ার, খেলাধুলা ইত্যাদি এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাতিল এবং বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চলতি মাসে সকল প্রকার অনুষ্ঠানের না করতে বলা হয়েছে সরকারিভাবে বলা হয়েছে। যে সব কানাডিয়ানরা দেশের বাইরে রয়েছেন, তাদের দ্রুত ফিরে আসতে বলা হয়েছে এবং বিশেষ বা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কানাডার বাইরে যাতে মানা করা হয়েছে।
তবে সব চেয়ে আতংক দেখা যাচ্ছে, বাজারে জিনিসপত্র কেনাকাটা উপচে পড়া ভীড় এবং হিড়িক! ফলে কসকো, শপারড্রাগস, ফ্রেশকো, ওয়ালমার্ট, নো ফ্রিল, মেট্রোসহ এথনিক গ্রোসারি স্টোরগুলোতে ক্রেতাদের প্রচন্ড ভীড় দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে মাক্স, হ্যান্ড ওয়াশ, এন্টি ভাইরাস জাতীয় দ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে। সাধারণ খাবার-দাবার কেনাকাটা করতে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। স্টোরগুলোর তাক খালি পড়ে আছে। টরন্টোর বাংলা পাড়ার গ্রোসারিগলোতেও একই চিত্র দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে মেসি স্কয়ারের আজাদ গ্রোসারির মালিক আদুল কালাম আজাদ ইত্তেফাককে বলেন, আমি আমাদের সাপ্লাইয়ারদের সাথে কথা বলেছি, বড় বড় কোম্পানিগুলো সরজমিনে গিয়ে দেখেছি; বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ জিনিস আছে। যা দুই-তিন মাস সাপ্লাই দিতে পারবে। কিন্তু ক্রেতা অযথা মাত্রা অতিরিক্ত জিনিস কিনে স্টক করছে। এই ‘আর্টিফিসিল ক্রাইসিস’ তৈরি করছে মিডিয়া। তারা জনগণের মধ্যে পেনিক সৃষ্টি করছে। ফলে অনেকেই ২ বস্তার স্থলে ২০টা বস্তা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। দূর্যোগের প্রস্তুতি নেয়া ভালো; তা-ই বলে পাগলামি ভালোনা।
তিনি আরো বলেন, হয়তো শব্জি জাতীয় জিনিসের সংকট হয়ে পারে। তবে শুকনো জিনিসপত্র যথেষ্ট পরিমাণ রয়েছে। আর অনেক জিনিস তো কানাডাতেই উৎপাদন হচ্ছে। যেমন, হ্যান্ড ওয়াশ এখানেই উৎপাদন হচ্ছে। হয়তো প্লাস্টিকের বোতল চাইয়া থেকে আসে। সেটা একটা সমস্যা হতে পারে। তবে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তারপরও শহরের বাইরে খামার থেকে বা ওয়ার হাউজ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদি কিনার হিড়িক পড়েছে!