৪০ হাজার কোটি ডলারের বাঁধ দিয়েও রক্ষা পাবেনা মার্কিন উপকূলীয় অঞ্চল

নিউইয়র্ক : দিনশেষে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নেয়া অধিকাংশ পদক্ষেপই আপেক্ষিক মূল্যে বিবেচনা করা যায়। এই আপেক্ষিকতা নির্ভর করে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিগুলোর পরিবর্তিত অবস্থার উপর। কারণ, বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির পেছনে তাদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চল ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি থেকে বাঁচাতে এখন এমনই এক জটিলতার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ দেশটি প্রাথমিকভাবে সি-ওয়াল বা বিশাল আকারের সামুদ্রিক স্রোত প্রতিরোধী দেয়াল নির্মাণ করে উপকূলীয় জনপদে রক্ষা করার পরিকল্পনা করেছে। আর সা¤প্রতিক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই ধরনের পরিকল্পনার বাস্তব ভিত্তি, সার্বিক খরচ এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সূত্র : গিজমোডো।

 

গত বৃহস্পতিবার সেন্টার ফর ক্লাইমেট ইন্টেগ্রেটি নামক সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, উপকূলীয় শহর, উপ-শহর এবং ছোট্ট বসতি রক্ষায় সি-ওয়াল নির্মাণে ২০ বছর সময় লাগবে এবং খরচ হবে ৪১ হাজার ৬শ কোটি ডলার। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের আবহাওয়া খুব বেশি প্রতিকূল না হলেই কেবল এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। অন্যথায়, খরচের পরিমাণ ও নির্মাণের সময় আরো বাড়বে।

 

প্রতিবেদনটি আরো জানায়, ছোট্ট উপকূলীয় বসতিগুলোর ঘরপ্রতি সুরক্ষায় ১০ লাখ ডলার খরচ করতে হবে। বড় শহরগুলোর আবাসন প্রতি যার পরিমাণ শত কোটি ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এরপরেও, সমুদ্রের গ্রাস থেকে জনবসতির শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ফলে বিপুল অর্থ ব্যয়ের পড়েও যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিপুল অঞ্চল সমুদ্রের লীন হবে, সা¤প্রতিক প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে এমন আশংকা তীব্রতর হয়েছে।

 

গতবছর থেকে মার্কিন উপকূলের অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় সামুদ্রিক স্রোতের কারণে সৃষ্ট বন্যার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই আশংকা আরো বাড়ছে। এদিকে প্রতিবেদনটি বলছে, চলতি শতকের মাঝামাঝি সাড়ে ৪ দশমিক আরসিপি গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ বৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। এরপর যদি মানুষ নিঃসরণ কমিয়ে আনতে পারে, তবেই সামুদ্রিক দেয়াল কিছুটা কার্যকর প্রতিরক্ষা দিতে পারবে।

 

উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে হ্যারিকেন স্যান্ডি এবং মাইকেলের মতো শক্তিশালী হ্যারিকেনগুলো এসময় নিয়মিতভাবে মার্কিন উপকূলে আঘাত হানবে। এবং এদের প্রভাবে সমুদ্র স্রোতের শক্তিও বাড়বে। যা সি-ওয়ালগুলির সক্ষমতা প্রতিনিয়ত পরীক্ষা করবে। ফলে অনেকস্থানেই এই ব্যবস্থা সমুদ্রের বিনাশি শক্তি থেকে জনবসতির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *