ভারতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ৬০ পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে

ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে করা অন্তত ৬০টি পিটিশন নিয়ে আজ বুধবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে। পিটিশন যারা দাখিল করেছেন তাদের মধ্যে কংগ্রেস, ইন্ডিয়ান মুসলিম লীগ, তৃণমূল কংগ্রেস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপির শরিক অসম গণপরিষদও রয়েছে।

 

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ আজ এসব পিটিশনের শুনানি করবেন। বেঞ্চে থাকা অপর দুই বিচারপতি হলেন বি আর গাভাই ও সুরিয়া কান্ত। আইনটি পাস হওয়ার পর গত এক সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে এসব পিটিশন দাখিল হয়।

 

বিজেপি সরকার সম্প্রতি ১৯৫৫ সালে প্রণীত দেশটির নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে নতুন একটি আইন পাস করেছে। নতুন আইন অনুযায়ী ২০১৫ সালের আগে প্রতিবেশী পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে নির্যাতিত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে।

 

সুপ্রিম কোর্টে যারা পিটিশন দাখিল করেছেন তাদের দাবি, ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদান করা সংক্রান্ত নতুন এই আইন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের পরিপন্থী। যা সংবিধানের মুলনীতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এর মাধ্যমে মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সমতা লঙ্ঘিত হবে, যা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার।

 

পিটিশন দাখিলকারীরা আরও বলছেন, নতুন এই আইনের মাধ্যমে জাতির ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা বলছেন, সরকারকে দেশের সকল নাগরিকের সব রকম ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি সমান সম্মান জানাতে হবে। কিন্তু এই আইন সর্বজনীন ধর্মনিরপেক্ষতার ওই নীতিকে লঙ্ঘন করে ধর্মীয়ভাবে দেশকে মেরুকরণ করবে।

 

গত বৃহস্পতিবার ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সংসদের উভয়কক্ষে পাস হওয়া বিলটিতে স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হয়। তারপর থেকেই উত্তরপূর্ব ভারত, পশ্চিমবঙ্গ এবং দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ সহিংসতায় রুপ নিলে আসামে অন্তত ছয়জনের প্রাণহানিও ঘটেছে।

 

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ঘোষণা দিয়েছেন তারা তাদের রাজ্যে নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রণয়ন করতে দেবেন না। তবে ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকত্ব ইস্যুটি দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *