ভারতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশি তাণ্ডবে সরব বলিউড

 

ভারতে মুসলিমবিদ্বেষী সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হওয়ার প্রতিবাদে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বলিউডের নায়ক-নায়িকা ও কলাকুশলীরা। মুসলিম শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি তাণ্ডবের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

 

বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে টুইটবার্তায় তাপসী বলেন, ‘এটি কী শুরু নাকি শেষ– তাই ভাবছি। যাই হোক না কেন, এই ভূখণ্ডের নতুন নিয়ম লেখা হচ্ছে। যারা এই নিয়মের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন না, তাদের কপালে কী লেখা আছে, সেটিই দেখা যাচ্ছে। এটি হৃদয় চুরমার করা একটি ভিডিও এবং আশা করি সবারই একই অবস্থা।’

 

এ হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বলিউড নির্মাতা অনুরাগ কশ্যপ টুইট করেন, ‘ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে… আর চুপ থাকা যায় না। এই সরকার স্পষ্টতই ফ্যাসিবাদী… আর যখন দেখছি যারা আওয়াজ তুললে কাজ হবে, সেই কণ্ঠস্বরগুলো চুপ করে আছে, রাগ হচ্ছে।’

 

শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ জানানোর গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে জানিয়ে মনোজ বাজপেয়ি টুইটে লেখেন, ‘এমন সময় আসতেই পারে, যখন অন্যায় প্রতিরোধের শক্তি আমাদের নাও থাকতে পারে। কিন্তু এমন সময় কখনই আসবে না, যখন আমরা প্রতিবাদ করতে ব্যর্থ হব। শিক্ষার্থী এবং তাদের প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে আছি! প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়নের নিন্দা জানাই।’

 

জামিয়া মিলিয়ার সাবেক শিক্ষার্থী পরিচালক অলংকৃতা শ্রীবাস্তব টুইট করেন, ‘আমি জামিয়াতে পড়াশোনা করেছি। ওখানেই আমি চলচ্চিত্র নির্মাণের পাঠ নিয়েছি। আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুদের পেয়েছি ওখানেই। একটা সময় যখন আমি নিজেকে নিয়ে সংশয়ে থাকতাম; জীবনের পথে কীভাবে এগোব, সে ভাবনায় জর্জরিত থাকতাম, তখন ওখানেই আশার আলো দেখেছিলাম, অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমার ভেতরটা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে ক্যাম্পাসে আক্রান্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য।’

 

অলংকৃতার মতোই টুইটারে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিচালক-অভিনেত্রী কঙ্কনা সেনশর্মা ও অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর।

 

স্বরা লেখেন, ‘দিল্লির জামিয়াতে টিয়ারগ্যাস ছড়ানো হচ্ছে। ক্যাম্পাসে যে হিংস্র কার্যকলাপের খবর আসছে, তাতে স্তম্ভিত হচ্ছি। ছাত্রছাত্রীরা কি অপরাধী, তাদের হোস্টেলে টিয়ারশেল ছোড়া হচ্ছে, কেন? যা ঘটছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

 

কঙ্কনাও এ ঘটনায় দিল্লি পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। দিল্লি পুলিশকে বলছি– লজ্জা হওয়া উচিত।’

 

প্রসঙ্গত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়ার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছেন মুসলমানরা। মুসলিম শিক্ষার্থীরা এই বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভ পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে উত্তরপ্রদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *