ব্যারিস্টার কায়সার কামাল কারাগারে, এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

 

প্রতারণা ও সংসার ভাঙ্গার অভিযোগে এক আইনজীবীর দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাকে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস ব্যারিস্টার কায়সার কামালের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। আদালতে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। কায়সার কামালকে যেকোন দিন জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।

 

কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বুধবার রাতে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের সামনে তার এক সহকারীর সাথে নারী সংক্রান্ত বিষয়ে ঝগড়া-মারামারি করা অবস্থায় কায়সার কামালকে আটক করা হয়। তার সহকারী অপর আইনজীবী আতিকুর রহমানের দায়ের করা মামলায় পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।মামলায় আতিকুর রহমান নারী হেনস্থা,প্রতারণা ও সংসারের ক্ষতির অভিযোগ তুলেছেন। মামলার একমাত্র আসামি ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাতেই আতিকের স্ত্রীকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ব্যারিস্টার আতিক তার মামলায় অভিযোগ করেন যে, তার অজ্ঞাতে তার স্ত্রীকে নিয়ে কায়সার কামাল গোপনে গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াতেন, বিভিন্ন স্থানে সময় কাটাতেন। এক পর্যায়ে কায়সার কামাল ও আতিকের স্ত্রীর মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়। এতে আতিকের সংসারের ও ব্যক্তি হিসাবে বিপুল ক্ষতি হয়েছে।

 

এদিকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের গতকাল জানান, নিজের সহকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার আতিকুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয় ও অনৈতিক সম্পর্কের কারণে মারামারির ঘটনায় জড়িত কায়সার কামালকে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার দেখানো হয়।

 

ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা আরও জানান, ব্যারিস্টার এম আতিকুর রহমানের বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে কায়সার কামালের সঙ্গে তার স্ত্রীর পরিচয় হয়। তার সূত্র ধরে কায়সার কামাল আতিকের স্ত্রীকে নিয়মিত উপহার পাঠাতেন। এক পর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ইতোমধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সংসারে অশান্তি দেখা দেয়।কিন্তু কায়সার কামাল দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও দলে প্রভাবশালী হওয়ায় এর কোনো সুরাহা না পেয়ে ব্যারিস্টার আতিক চুপ করে থাকেন। এরপর কায়সার কামাল ও স্ত্রীর সঙ্গে একটি অনৈতিক সম্পর্ক ধরে ফেলেন। তিনি হাতেনাতে ধরার জন্য চেষ্টা করতে থাকেন। বুধবার তাদের (আতিকের স্ত্রী ও কায়সার কামাল) দেখা করার তথ্য জানতে পেরে তিনি ফলো করতে থাকেন। ব্যারিস্টার এম আতিকুর রহমান তার স্ত্রীর কর্মস্থলের কাছে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কায়সার কামালকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পান। তাদের দুই জনের মাঝে উপস্থিত হলে কায়সারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন আতিক। পরকীয়া ও সংসার ভাঙ্গার চেষ্টার বিষয় নিয়ে কায়সার কামাল ও স্ত্রীর সঙ্গে আতিকের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তারা হাতাহাতি ও মারামারিতে লিপ্ত হলে সেখানে মানুষ জড়ো হতে থাকে। বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের জটলা দেখে ডিউটিরত পুলিশ তাদের তিনজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে মূল ঘটনা জানতে পারে পুলিশ। এক পর্যায়ে আতিক লিখিতভাবে কায়সারের বিরুদ্ধে সংসার ভাঙ্গা, প্রতারণা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন।

 

পুলিশ তার সহকর্মীদের কাছে খোঁজখবর নিয়ে জানায়, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রথম স্ত্রীকে আগেই ডির্ভোস দিয়েছেন। এ ছাড়া লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়ার সময় এক নারীকে বিয়ে করেন, তাকেও ডিভোর্স দেন। পরে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তিনি কাউকে বিয়ে করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *