দেশের কল্যাণে বাবার মতো জীবন দিতে হলে দিয়ে দেব

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যা যা করণীয়, আমরা তার সবই করে যাচ্ছি এবং করে যাব। আর কী কী দেবার আছে জানি না। তবে এইটুকু বলতে পারি আমার জীবনটা আমি উত্সর্গ করেছি বাংলাদেশের জনগণের জন্য। বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে যা যা প্রয়োজন সবই আমি করব, প্রয়োজনে আমার জীবনও যদি দিতে হয় বাবার মতো তাও দিয়ে দেব। বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে ময়মনসিংহ-৬ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

 

ক্যাসিনো, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে

 

একাধিক সংসদ সদস্যের তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, ক্যাসিনো ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমাজের সব স্তরে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। ক্যাসিনো-দুর্নীতির সঙ্গে যে-ই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে জেলা, উপজেলা ও পৌরসভাসহ সব সেক্টরে ও স্থানে সরকারের চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের কারা সিঙ্গাপুরে ক্যাসিনো খেলেছে, তাদের তথ্য চেয়ে সে দেশের সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

 

জাতীয় পার্টির (জাপা) এমপি রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে ক্যাসিনোর আস্তানাগুলো উচ্ছেদ করেছে। সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে আদালতে সোপর্দ করেছে। ভবিষ্যতে যেন কেউ এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে না পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১৩ হাজার ২৩৮টি অভিযোগের অনুসন্ধান, ৩ হাজার ৬১৭টি মামলা দায়ের এবং ৫ হাজার ১৭৯টি চার্জশিট দাখিল করেছে। জাপার মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, সব দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে দুদক কাজ করছে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রাজনৈতিক ব্যক্তি ছাড়াও সরকারি কর্মচারীসহ অন্য যেসব ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পাশাপাশি ক্যাসিনো, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।

 

চীন বন্দর ব্যবহার করতে চাইলে স্বাগত জানাব

 

জাপার মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা সংসদকে জানান, সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানির কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারে ভারতের সঙ্গে এসওপি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ফলে ভারত আমদানি-রপ্তানির জন্য এই বন্দর দুটি ব্যবহার করতে পারবে। এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। ভারতের পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে নেপাল ও ভুটান আমাদের বন্দর ব্যবহারের সুযোগ নেবে বলে আশা করি। চীনের দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলোও এ বন্দর দুটি ব্যবহার করতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

 

তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা ঠিক, রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পেছনে জিয়াউর রহমানের যে হাত ছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর বিভিন্ন হত্যা-ক্যুর রাজনীতি শুরু হয় এবং এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *