আবারও বাঙালির নোবেল জয়

 

১৯১৩ সাল। এ বছর গীতাঞ্জলি (ইংরেজি অনুবাদ, ১৯১২) কাব্যগ্রন্থের জন্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। সর্বপ্রথম বাঙালি হিসাবে তিনিই প্রথম  নোবেল জয়ী।

 

১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্রের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য তিনি অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

 

২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন আরেক বাঙালি। তিনি হলেন বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ‘দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা’র জন্য সে বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয় তাকে।

 

আর চতুর্থ বাঙালি হিসেবে ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস সোমবার অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে তিনজনের নাম ঘোষণা করে। এরা হলেন- অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, এস্তার দুফলো ও মাইকেল ক্রেমার। তাদের মধ্যে অভিজিৎ ব্যানার্জি ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি।

 

অভিজিৎ বিনায়ক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটির ফোর্ড ফাউন্ডেশনের অর্থনীতি বিভাগের একজন আন্তর্জাতিক অধ্যাপক। এছাড়া তিনি অর্থনীতি বিশ্লেষণ ও উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ এর সাবেক প্রেসিডেন্ট, সেন্টার ফর ইকোনমিক পলিসি রিসার্চ, কাইল ইনস্টিটিউট, আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স এবং ইকোনমিক সোসাইটির সম্মানিত ফেলো। তিনি পুর ইকোনমিকসের একজন সহকারী লেখকও।

 

১৯৬১ সালে কলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মা নির্মলাদেবী ছিলেন সেন্টার ফর সোশ্যাল সায়েন্সের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক। তার বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক।

 

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাত্রজীবন শুরু হয়েছিল কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। পরে অর্থনীতি নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে। ১৯৮১ সালে স্নাতক হওয়ার পরে ১৯৮৩ সালে অর্থনীতিতে মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

 

এরপর ১৯৮৮ সালে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন অভিজিৎ বিনায়ক। কলকাতার বাসিন্দা এবং বাল্যবন্ধু ডা. অরুন্ধুতি তুলি বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিয়ে করেছিলেন অভিজিৎ। ১৯৯১ সালে তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। পরে সেই বিয়ে ভেঙে যায়। আরো পরে মৃত্যু হয় অভিজিৎ বিনায়কের পুত্র কবিরের।

 

এবার নোবেল পুরস্কারের ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার ভাগ করে নেবেন তিন বিজয়ী। আগামী ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *