সিলেটে হকার উচ্ছেদে ব্যর্থ নগর কর্তৃপক্ষ

নিউজ ডেস্কঃ 

সিলেট নগরীতে ফুটপাতে হকারমুক্ত রাখতে নগরীর লালদীঘিরপাড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে দেওয়া হয়েছিল হকারদের বসার স্থান।

প্রথম কয়েকদিন সেখানে বসলেও কিছুদিনপর সেই পুরনো চিত্র দেখা যায় নগরীতে। নগরীর ফুটপাত হকারমুক্ত করতে শুরুই সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় অ’ভিযান করতে দেখা যায় সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরকে।

নিয়েছিলেন ভাসমান হকারদের পুনর্বাসনের দাবির প্রেক্ষিতে সকলের মতামতের ভিত্তিতে নিয়ে ছিলেন উদ্যোগ। কিন্তু তার সেই সকল উদ্যোগ ব্যস্তে যাচ্ছে।

এত অ’ভিযান ও পরিকল্পনার পরও হকারমুক্ত করা যাচ্ছে না।তবে কী’ হকার উচ্ছেদে ব্যর্থ নগরকর্তৃপক্ষ এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।আবার পুরনো চেহারায় ফিরেছে সিলেটের ফুটপাত।

ফুটপাতে পথচারীদের সুবির্ধাতে ও যানজটমুক্ত নগরীর জন্য নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর ফুটপাত হকারমুক্ত করা হয়।

ফুটপাতে আর না বসার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয় সেই সাথে বসার জন্য করে দেওয়া হয়েছিল নির্দিষ্ট একটি স্থান। কিন্তু নগর কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দেশনাই কাজে আসেনি। তাদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গু’লি দেখিয়ে হকাররা ফের নগরীর ফুটপাত দখল করে নিয়েছে।

এ অবস্থায় নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।ফুটপাতে বসা নিষেধ সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও তা আড়াল হয়ে যায় সাজানো বাহারি পসরায়। নগীরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, অফিস-আ’দালত, মা’র্কেট-দোকান এমনকি নগরভবনের সামন জুড়ে বসে ফুটপাত।

চলতি বছরের মধ্যবর্তী সময়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী উদ্যোগ নিয়েছিলেন নগর ভবন, সিটি সুপার মা’র্কেট ও সিলেট বিভাগীয় প্রধান ডাকঘরের সামনের ফুটপাত এবং রাস্তা থেকে ভ্রাম্যমাণ দোকানদারদের সরিয়ে এ সড়ক পুরোপুরি যানজটমুক্ত করতে।

নগরভবনের সামনে থেকে লালদিঘীর পাড় রাস্তায় প্রবেশের মুখ পর্যন্ত সড়কের (ফুটপাতের দিকের) পাশ দিয়ে দেড় ফুট উচ্চতার গার্ড ওয়াল স্থাপন করে লেন তৈরি করা হয়।

লেনের ভেতরে রাখা হয় সাড়ে ৪ফুট জায়গা। ওই গার্ড ওয়াল স্থাপন শেষে গত ১৯ জুলাই থেকে লেনের ভেতর দিয়ে রিকাশা ও ভ্যান চলাচল শুরু করে। আর অন্যান্য গাড়িগুলো চলাচল করে মূল সড়ক দিয়ে। এতে ওই রাস্তার যানজট অনেকটা কমে যায়। প্রথম কয়েকদিন ওই লেন দিয়ে রিকসা চলাচল করলেও সেই লেনটি কিছুদিনের মধ্যে দখল করে নেয় ভাসমান হকাররা।

সরেজমিনে নগরীর বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাতের পাশেই খুঁটিতে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে হকারমু এলাকা। হকার বসা নিষেধ।

কিন্তু সেই খুঁটির পাশেই নানা ধরণের পণ্যসামগ্রী নিয়ে বসে থাকেন হকাররা।সিসিক মেয়র বা পু’লিশের গাড়ির হুইলসেলের শব্দ শুনলেই দৌঁড় দিয়ে সবকিছু নিয়ে ঘা ঢাকা দেন। গাড়ি যাওয়া মাত্র সেই আগের দৃশ্য দেখা যায়।

বন্দরবাজার, সুরমা মা’র্কেট এলাকা, সিটি মা’র্কেট এলাকা, কোর্ট পয়েন্ট হয়ে জিন্দাবাজার এবং জিন্দাবাজার থেকে চৌহাট্টা হয়ে আম্বরখানা পয়েন্ট, সুবিদবাজার, লামাবাজার, রিকাবীবাজার, শি’বগঞ্জ, মিরাবাজার পুরো ফুটপাত আবারও চলে গেছে হকারদের দখলে।

হকাররা বিভিন্ন জিনিসপত্র ছড়িয়ে রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। তাদের এ ব্যবসার পসরার কারণে ফুটপাত দিয়ে পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শি’শু পথচারীরা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হচ্ছেন।

জাবেদ নামে এক পথচারী বলেন, কিছুদিন পরপর দেখা যায় দখলমুক্ত করার যে অ’ভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু আবার সেই আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া ফুটপাত দেখে আশাহত হচ্ছি। তাহলে কী’ হকার উচ্ছেদে ব্যর্থ নগর কর্তৃপক্ষ।

লোক দেখানো অ’ভিযান না দিয়ে, ভালো করে অ’ভিযান দিলে হকারমুক্ত ফুটপাত আশা করি।শরীফ নামে আরেজন বলেন, হকারদের জন্য যেখানে জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেখানে হকাররা না গিয়ে রাস্তা দখল করে বসে। ফুটপাত দিয়ে যাওয়া আসা করতে না পেরে ঝুঁ’কি নিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলাচল করতে হয়।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের কনজারভেটিভ অফিসার হানিফুর রহমান বলেন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে প্রতিদিন অ’ভিযান চলছে। সরঞ্জামাদিও জ’ব্দ করে নিয়ে আসছি। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না। উপরন্তু ছেড়ে দিতে সুপারিশ আসে।

হকারদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে যেতে রাজি নয় তারা। অ’ভিযানে নামলেই দৌঁড় দিয়ে পালিযে যায়। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি সবার সহযোগীতা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পু’লিশের মুখপাত্র বিএম আশরাফ উল্যা তাহের বলেন, ফুটপাত দখলমুক্ত করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

সবার সহযোগিতা পেলেই ফুটপাত দখলমুক্ত করা সম্ভব। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট থা’নাগুলোর অধীনস্থ জায়গাগুলোতে নিয়মিত অ’ভিযান চলছে।আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *