নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নবীজির (সা.) কর্মসূচি

ধর্ম ডেস্কঃ 

২৫ নভেম্বর ছিল আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। নারীদের প্রতি নির্যাতন কখনই সুস্থ মস্তিষ্কের কাজ হতে পারে না।

ইসলাম নারীকে দিয়েছে যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান। নারীদের প্রতি উত্তম আচরণের ব্যাপারে মহানবী (সা) বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতেন। তিনিই (সা.) পৃথিবীতে সর্বপ্রথম নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ইসলাম যেভাবে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন ইসলামের পূর্বে পৃথিবীর বুকে আর কোন ধর্মই এভাবে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেনি।

আর হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, হজরত হাকিম ইবনে মুয়াবিয়া (রা.) তার পিতা মুয়াবিয়া (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, হে আল্লাহর রাসুল! স্বামীর ওপর স্ত্রীর কি কি অধিকার রয়েছে?

তিনি (সা.) বললেন, তার অধিকার হল যখন তুমি খাবে তখন তাকেও খাওয়াবে, তুমি যেমানের কাপড় পরবে তাকেও সে মানের কাপড় পরাবে। তার মুখে আঘাত করবে না। অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করবে না’ (আবু দাউদ)। এই হল ইসলাম ও রাসুল করিম (সা.)-এর আদর্শ।

বর্তমানে আমরা মুসলমান এবং শ্রেষ্ঠ নবীর উম্মত হওয়ার দাবি করছি ঠিকই তবে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা এবং শ্রেষ্ঠ নবীর আদর্শ  আমাদের মাঝে দেখা যায় না।

ইসলাম ও বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্বব্যাপী নারী সমাজের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার এক জীবন্ত আদর্শ স্থাপন করেছেন। মানব মন ও মানব সমাজে নারী প্রগতির গোড়াপত্তন করে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন। ইসলামে নারীর স্বাধীন মত প্রকাশের মৌলিক বাক-স্বাধীনতা আছে। নর-নারী উভয়ে আশরাফুল মাখলুকাত হিসাবে স্বীকৃত এবং কর্মফল অনুযায়ী স্বর্গ লাভের সম অধিকার প্রাপ্য।
যেভাবে পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ঘোষণা করছেন, ‘তিনি তোমাদের একই সত্তা হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার জীবনসঙ্গিণীকে একই উপাদান হতে সৃষ্টি করেছেন’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১)।

অপর এক স্থানে আল্লাহতায়ালা বলছেন, ‘যে ব্যক্তি মোমেন অবস্থায় সৎকর্ম করবে সে পুরুষ হোক বা নারী সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’ (সুরা মোমেন, আয়াত: ৪০)।

ইসলামের কষ্টিপাথরে নারী পুরুষের মর্যাদা ও অধিকার তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ইসলাম নারীকে শুধু পুরুষের সম-অধিকার নয় বরং কোন কোন ক্ষেত্রে পুরুষ থেকে নারীকে অধিক মর্যাদা দিয়েছে।

মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত ঘোষণা করে ইসলাম নারী জাতিকে সর্বোত্তম মর্যাদায় ভূষিত করেছে। যে মর্যাদা পুরুষকে দেয়া হয় নি। ইসলামে একজন নারী একজন পুরুষের চেয়ে তিনগুণ বেশি শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি ও মর্যাদার অধিকারী।

পারিবারিক জীবনে সংসার পরিচালনার ক্ষেত্রে নারীর ওপর পুরুষের প্রাধান্য থাকলেও সার্বিক মূল্যায়নে ইসলাম নারী জাতিকে পুরুষের অধিক মান-মর্যাদার উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করেছেন, যা অন্য কোন ধর্ম বা জাতিতে করেনি।

আমাদের কতই না সৌভাগ্য, মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আখ্যায়ীত করেছেন, শ্রেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও আমার দ্বারা কিভাবে অন্যায় কাজ সংঘটিত হতে পারে?

তাই আসুন না, সকল প্রকার অন্যায় থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষায় জীবন পরিচালনার তৌফিক দান করুন, আমিন।

লেখক: মাহমুদ আহমদ 

ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *