সিলেটে ব্যাটারিচালিত বাহন বন্ধে উদাসীন কর্তৃপক্ষ

নিউজ ডেস্কঃ ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়নে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। একদিনের লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে দায়মুক্তি নিয়েছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এর আগে উচ্চ আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে সিসিকের পক্ষ থেকে ৮ নভেম্বর থেকে অভিযান শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

নগরীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিসহ পাড়া-মহল্লায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ বাহনগুলো। একদিনের অভিযানে মেয়র আরিফুল হকের নেতৃত্বে সিসিকের একটি দল ১২টি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করে অভিযান শেষ করলেও অভিযানের ৯ দিন পেরিয়ে গেলেও মেয়রসহ সিসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ ব্যাপারে রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছেন। শনিবার আম্বরখানার বড়বাজার এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে রিকশা, ব্যাটারি-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ। এ সময় তারা বলেন, হঠাৎ করে ব্যাটারি-রিকশা ও ইজিবাইক বন্ধের নির্দেশনায় খেটে খাওয়া মানুষের জীবন-জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এগুলো বন্ধ করা হলে ৫০ লাখ মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরবে। তাই সরকার বিকল্প ব্যবস্থা করে নীতিমালা তৈরি করে তাদের লাইসেন্স দিয়ে ব্যাটারি-রিকশা ও ইজিবাইক চালকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জোর দাবি জানানো হয়।

জানা গেছে-নগরীর শিবগঞ্জ, টিলাগড়, মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, লিচু বাগান, সুবিদবাজার, আখালিয়া, নোয়াপাড়া, উপশহরসহ অধিকাংশ এলাকায় চলছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ বাহন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় সিটি করপোরেশন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, টমটম বন্ধে ৭ নভেম্বর মহানগরের সুবিদবাজার এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় জনসচেতনতার লক্ষ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, টমটমের চালকসহ যাত্রী সাধারণের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র আরিফুল হক। অভিযানে ১২টি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়।

অভিযান শেষে সিসিক মেয়র আরিফুল বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে যান্ত্রিক যানবাহন সুষ্ঠুভাবে চলাচল নিশ্চিতকরণ, নগরের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং যানজট নিরসনের লক্ষ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, টমটম চলাচল বন্ধে ৮ নভেম্বর থেকে নগরজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাবে। সিলেটকে একটি আধুনিক ও স্মার্ট নগরে প্রতিষ্ঠায় অভিযানে সর্বস্তরের নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন সিসিক মেয়র। তবে অবৈধ ব্যাটারিচালিত বাহন বন্ধে মঙ্গলবার পর্যন্ত নগরীতে সিসিকের কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি।

সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের যৌথ বেঞ্চ সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত বাহন বন্ধের নির্দেশ দেন। ট্রাফিক পুলিশ ও সিসিক নিয়মিত অভিযান চালালেও এসব অবৈধ বাহন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বরং দিন দিন এসব যানের সংখ্যা বাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *