নিউজ ডেস্কঃ শনিবার(৭ নভেম্বর) মেক্সিকোর ক্যানকুনের ক্যারিবিয়ান রিসোর্টের কাছে একটি সমুদ্র সৈকতে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে জড়িত থাকার সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা ভোআ নিউজ সূত্রে এ খবর জানা যায়। বৃহস্পতিবার মেক্সিকোর ক্যানকুনে ক্যারিবিয়ান রিসর্টের কাছে সমুদ্র সৈকতে দুই দলের সশস্ত্র সংঘর্ষ দুই মাদক পাচারকারীর মৃত্যু হয়।
আকস্মিক এই গুলি চালানোর ঘটনায় বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই নিয়ে কয়েক সপ্তাহে দ্বিতীয় বার মেক্সিকোতে এই ধরনের ঘটনা ঘটল। করোনা ভাইরাসের দাপট কমার পর থেকে আসতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটন ব্যবসা। সেই সময়ে এই ধরনের ঘটনা ব্যবসার ক্ষতি করার পাশাপাশি বিশ্বের কাছে মেক্সিকো সম্পর্কে এক নেতিবাচক বার্তা দিত বলেই মনে করা হচ্ছিল। তারম ধ্যেই দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করে কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিতে চাইল মেক্সিকো প্রশাসন।
কুইন্টানা রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, চারটি গাড়িতে চেপে সমুদ্রে সৈকতে এসেছিলেন আততায়ীরা। তার মধ্যে তিনটি গাড়িকে চিহ্নিত করা গিয়েছিল। সেই তিনটি গাড়ির মধ্য দুটির চালককে আটক করা হয়েছে তৃতীয় জন কোনক্রমে পালিয়ে গিয়েছেন। বিবৃতিতে অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, “দুই গাড়ি চালককে আটক করা হয়েছে। তৃতীয় জন পালিয়ে গিয়েছেন। পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতিদের গুলির লড়াই হয়েছিল। তবে তৃতীয় ব্যক্তি জঙ্গলে এলাকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন।” পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, এই সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত দুটি দলই সিনালোওয়া থেকে এসেছিল এবং তাঁরা মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত।
উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর সমুদ্র বিচে গুলি চালনার ঘটনাটি ঘটে। সমুদ্র সৈকতের পাশের হোটেলে থাকা পর্যটকরা গুলি চালানোর ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তারা জানিয়েছিলেন গুলির আওয়াজ পাওয়ার পরেই পর্যটকরা নিরাপদ আশ্রয়েক খোঁজে চারিদিকে ছুটোছুটি শুরু করেছিল। হায়াত জিভা রিভেরা ক্যানকুন রিসোর্টে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক মাইক সিংটন টুইট করে জানান “অতিথিরা আমাকে বলছে যে তারা সৈকতে ভলিবল খেলছিলেন ঠিক সেই সময়েই দুষ্কৃতিকারীরা বন্দুকধারীর কাছে এসে গুলি চালাতে শুরু করে। গুলির আওয়াজ শুনেই সবাই সমুদ্র সৈকত এবং সুইমিং পুল থেকে দৌড়তে শুরু করে। রিসোর্টের কর্মচারীরা আমাদের রান্নাঘরের পিছনে লুকানো ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন।”
এই গুলি চালনার ঘটনার পরেই ফরেনসিক সার্ভিসের কর্মীরা এবং ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন। সংবাদ সংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক জানিয়েছেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে হেলিকপ্টারও পাঠানো হয়েছিল। মাদক পাচারকারী দল গুলির মধ্যে লড়াই মেক্সিকোতে প্রথম নয়। ২০০৬ সালের আগে সরকার কর্তৃক সেনা বাহিনী মোতায়েন করার আগে এই লড়াইতে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ২০০৬ সালেই মেক্সিকোতে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়েছিল। গত মাসেই, তুলুমে সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে জার্মানি ও ভারতের দুই পর্যটক নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন।