দূতাবাস বন্ধ না করতে রাশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের আহ্বান

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্কে আগে থেকেই শীতলতা চলছিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর সেই সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। তবে পরিস্থিতি যা–ই হোক না কেন, পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়াটা জরুরি বলে মনে করছেন মস্কোয় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন সুলিভান। এ কারণেই রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ করা ক্রেমলিনের উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সোমবার রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা তাসকে এসব কথা বলেছেন জন সুলিভান। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ হতে পারে কি না। জবাবে তিনি বলেন, এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা হবে ‘বড় একটি ভুল’।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এ অভিযানকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির ইতিহাসে একটি বাঁকবদল হিসেবে উল্লেখ করছেন। পুতিনের ভাষ্যমতে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে রাশিয়াকে অপমান করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন অভিযানের মধ্য দিয়ে মার্কিন আধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের একটি মন্তব্য বেশ সাড়া ফেলে। জনপ্রিয় মার্কিন গায়িকা টেলর সুইফটের ‘উই আর নেভার গেটিং ব্যাক টুগেদার’ গানটি পুতিনকে উৎসর্গ করেন তিনি। এই গানের মধ্য দিয়ে ব্লিঙ্কেন দূতাবাস বন্ধের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কি না, জানতে চাইলে সুলিভান বলেন, ‘আমরা কখনোই পুরোপুরি আলাদা হব না।’

উল্টো রাশিয়াই কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে পারে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘তারা পারে (কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে)। এ সম্ভাবনা আছে। যদিও আমি মনে করি, এটা হবে বড় একটি ভুল।’

এদিকে গতকালই ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী। তবে এই মুহূর্তে এ ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা কম।

১৯৩৩ সালে মস্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ওয়াশিংটন। এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে বৈরিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তা সত্ত্বেও সে সম্পর্ক কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি। তবে ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দিন দিন অবনতি হয়েছে। মস্কোর ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *