বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সংখ্যালঘু নির্যাতনে উৎসাহ যোগাবে : যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ

নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশের ৬টি জেলায় গত দুর্গা পূজায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সুপরিকল্পিতভাবে সংঘটিত বর্বর নির্যাতন ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে হাইকোর্ট ২ মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা সবাই স্বাগত জানিয়েছিলো।

সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার ঠিক ৭দিন আগে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টের সেই আদেশ অনির্দিষ্টকালের জন্যে স্থগিত করে দিয়েছেন। সুপ্রিমকোর্টের এই নির্দেশ হিন্দুদের হতাশ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এ স্থগিতাদেশের অর্থ হচ্ছে, সংখ্যালঘু নির্যাতনের তদন্তের কোন দরকার নেই, বিচারের তো প্রশ্নই ওঠেনা। সুপ্রিমকোর্টের এ স্থগিতাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতনে মৌলবাদীদের উৎসাহ যোগাবে।

উল্লেখ্য, হাইকোর্ট নির্যাতনের ঘটনাবলীর তদন্ত করে ৬০দিনের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন রিপোর্ট পেশ করার জন্য চট্টগ্রাম ও রংপুরের প্রধান মেট্রোপোলিটান মেজিস্ট্রেট এবং কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ফেনীর প্রধান জুডিশিয়্যাল মেজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আশায় বুক বেঁধেছিল যে, এবার হয়তো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ কার্যকর হবে; সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হবে, নির্যাতন বন্ধ হবে।

সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। হটাৎ করে হাইকোর্টের তদন্ত বন্ধ করার কারণ বাংলাদেশের হিন্দুরা জানতে চায়। এমনিতে প্রশাসন সংখ্যালঘুদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনা, সরকার মুখ ফিরিয়ে আছেন, তদুপরি হিন্দুরা যদি সুপ্রিমকোর্টেও ন্যায়বিচার না পায়, তবে তাঁরা যাবে কোথায়? আমরা সুপ্রিমকোর্টকে এ নির্দেশ পুন্:বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।

স্মর্তব্য যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার কখনো হয়না। মূর্তিভাঙ্গার বিচার হয়না, বিচার হয়না দেবালয় ভাঙার। দেবী স্বরস্বতী পূজার প্রাক্কালে এবার চট্টগ্রাম ও সাতক্ষীরায় দেবীমূর্তি ভাঙ্গা হয়েছে, কেউ গ্রেফতার হয়নি? আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং জজ্ সাহাবুদ্দীন কমিশন কয়েক হাজার সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীকে চিহ্নিত করে বিচার করার জন্যে তালিকা দিয়েছিলেন, সরকার তাদের বিচার করেনি। দেশের অসহায় মানুষের সর্বশেষ আশ্রয় সুপ্রীম কোর্টও এবার কার্যত: বলে দিলেন যে, সংখ্যালঘু নির্যাতনের আবার তদন্ত কি, কিসের আবার বিচার? প্রধান বিচারপতির আচরনে আমারা স্তম্ভিত, বিস্ময়ে হতবাক।

আমরা জানতাম, বিচারপতিগন হচ্ছেন জাতির বিবেক। সেই বিবেক আর রইলো কই! সংখ্যালঘুদের প্রতি বিচার বিভাগের এমত বিমাতাসুলভ আচরণ কাম্য নয়। সংখ্যালঘুদের প্রতি সরকার এবং জুডিশিয়ারির সর্ব্বোচ্চ আদালতের এহেন আচরন সভ্য দুনিয়ায় বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে কি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *